ইসরাইলে ভয়াবহ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিশোধ নিতে ইরানে বড় ধরনের পাল্টা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে তেলআবিব। এ বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রকাশ্যে ইসরায়েলকে ইরানে হামলা করতে বারণ করলেও গোপনে গ্রিন সিগন্যাল দিয়ে রেখেছেন। এবিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছে ইরান।
সোমবার (২১ অক্টোবর) জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাঈদ ইরাভানি বাইডেনের এই সায় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। খবর এনডিটিভির।
ইরান সতর্ক করে বলেছে, যদি ইসরাইলের প্রতিশোধমূলকভাবে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের ওপর হামলা চালায়, তবে সেই ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে পূর্ণ দায়িত্ব বহন করতে হবে। কারণ এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরাইলের পরিকল্পনার বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।
জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাঈদ ইরাভানি বাইডেনের মন্তব্যকে গভীরভাবে উদ্বেগজনক এবং উসকানিমূলক বলে অভিহিত করেছেন। তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সুইস সভাপতির কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন।
গত শুক্রবার যখন বাইডেনকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে, বর্তমানে ইসরাইল কীভাবে এবং কখন ইরানের ১ অক্টোবরের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়া জানাবে সে সম্পর্কে তার ধারণা রয়েছে কিনা। জবাবে বাইডেন বলেছেন হ্যাঁ এবং হ্যাঁ।
এ সংক্রান্ত একটি গোপন নথি সম্প্রতি মার্কিন সেনা সদর দফতর পেন্টাগন থেকে ফাঁস হয়েছে। এরপর থেকেই এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে।
বাইডেনের গোপন অনুমতি পেয়ে গত ১৫-১৬ অক্টোবর থেকেই ইসরাইলের বিমান ও নৌবাহিনী ইরানে হামলার প্রস্তুতি নিতে থাকে।
এদিকে ইসরাইলকে ইরানে হামলার অনুমতি সংক্রান্ত নথি ফাঁস হওয়ার ঘটনায় বাইডেন বেশ বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছেন।
হোয়াইট হাইজের নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গোপন নথি ফাঁসের ঘটনায় বেশ উদ্বিগ্ন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
উল্লেখ্য, ইরানকে গত ১ অক্টোবরের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাব দিতে সেখানে বড় ধরনের হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরাইল। সোমবার ইসরাইলের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেল কান ১১-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন দেশটির এক সরকারি কর্মকর্তা।
সাক্ষাৎকারে ওই কর্মকর্তা বলেন, ইরানে একটি বড় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরাইল। এছাড়া ইরানের যে কোনো সম্ভাব্য হামলা ঠেকানোর জন্য (ইসরাইলের) প্রতিরক্ষা বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে।
গত ১ অক্টোবর রাতজুড়ে ইসরাইলে প্রায় ২০০ ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরানের সেনাবাহিনী এলিট শাখা ইসলামি রেভোল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি)। হামলার ২ দিন পর ৩ অক্টোবর ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান কাতারে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় বলেন, ইসরাইল যদি গাজা এবং লেবাননে সামরিক অভিযান বন্ধ না করে, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে এ ধরনের হামলা আরও ঘটবে।
ইরানের হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য মিত্রদের সঙ্গে নিজেদের সুরক্ষা ও মধ্যপ্রাচ্যের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে নিবিড় আলোচনা শুরু করে ইসরাইল। এই আলোচনার ভিত্তিতেই গত শনিবার ইসরাইলে নিজেদের ক্ষেপণাস্ত্র সুরক্ষা বিষয়ক সমরাস্ত্র থাড মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্র।