দুই ভাই রস অ্যাডাইর ও মার্ক অ্যাডাইর ঝড়ে আয়ারল্যান্ডের কাছে হেলে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা।
এর আগে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হারের যন্ত্রণা ভোলার আগেই এবার আয়ারল্যান্ডের কাছে হার। এ যেন প্রোটিয়ার দেহে কাটা ঘায়ে লবণ ছেটানোর মতো অবস্থা। গতকাল আবুধাবিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে আইরিশদের কাছে ১০ রানে হেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আর সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরি পান আয়ারল্যান্ডের রস অ্যাডাইর। আর সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতেও এই প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাল তারা।
আইরিশদের জয়ের নায়ক দুই ভাই— রস অ্যাডাইর ও মার্ক অ্যাডাইর । ব্যাট হাতে সেঞ্চুরি করেছেন রস। এরপর বল হাতে তার ছোট ভাই মার্ক ৪ উইকেট নিয়ে ভেঙে দিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার মিডল ও লোয়ার মিডল অর্ডার।
আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে আয়ারল্যান্ডের ২৬তম শিকার দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৪টি দলকে হারিয়েছে হংকং। দুই দিন আগে ৮ উইকেটে জিতে সিরিজ শুরু করা দক্ষিণ আফ্রিকা কাল টসে জিতে ব্যাটিংয়ে পাঠায় আয়ারল্যান্ডকে। আইরিশরা করে ৬ উইকেটে ১৯৫ রান। এর মধ্যে ১৩৭ রানই এসেছে অধিনায়ক পল স্টার্লিং ও রস অ্যাডাইরের উদ্বোধনী জুটিতে। ৭ চার ও ১ ছক্কায় স্টার্লিং ৩১ বলে ৫২ রান করে ফেরেন।
রস অ্যাডাইর ফেরেন ৫৮ বলে ঠিক ১০০ রান করে দলকে ১৭৪ রানে রেখে তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে আইরিশদের তৃতীয় সেঞ্চুরিটি এনে দেওয়ার পথে ৫টি চার ও ৯টি ছক্কা মারেন ৩০ বছর বয়সি এ ব্যাটার। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে রস অ্যাডাইরের আগে আয়ারল্যান্ডের কোনো ব্যাটসম্যান ৮টির বেশি ছক্কা মারতে পারেননি।
ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা রস অ্যাডাইরকে ভাগ্যবান বলতেই হবে। এক-দুবার নয়, সেঞ্চুরি করার পথে পাঁচবার ‘জীবন’ পেয়েছেন তিনি। ১৯ রানে লিজাড উইলিয়ামসের করা শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়েও বোলার ওভারস্টেপিং করায় বেঁচে যান রস অ্যাডাইর। এরপর ১৪তম ওভারে ৭৮ রানে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দিয়েও শেষ পর্যন্ত ছক্কা পেয়ে যান। ভাগ্যক্রমে পাওয়া ওই ছক্কার ২ বল পরেই রানআউট হতে হতেও বেঁচে যান ৮৫ রানে দাঁড়ানো এ ব্যাটসম্যান। পরের ওভারের প্রথম বলে প্যাট্রিক ক্রুগারকে ফিরতি ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান।
এদিকে রান তাড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা দারুণ শুরুই করেছিল। রায়ান রিকেলটন ও রিজা হেনড্রিকসের উদ্বোধনী জুটি ৫.৩ ওভারেই দলকে এনে দেন ৫০ রান। ২২ বলে ৩৬ রান করে রিকেলটনের বিদায়ের পর ম্যাথু ব্রিটজকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ৭১ রান যোগ করে দলের রানটাকে ১২১-এ নিয়ে যান হেনড্রিকস। ৩২ বলে ৫১ রান করে হেনড্রিকসের বিদায়ের পরই পথ হারানো শুরু দক্ষিণ আফ্রিকার। তার বিদায়ের ৯ রান পরে আউট অধিনায়ক এইডেন মার্করাম (৫ বলে ৮)।
৪ উইকেট নেওয়া মার্ক অ্যাডাইরের প্রথম শিকার ট্রিস্টান স্টাবস। ১৬তম ওভারের শেষ বলে স্টাবসকে উইকেটকিপারের ক্যাচ বানানো মার্ক অ্যাডাইর প্রান্ত বদলে এরপর আক্রমণে আসেন ১৯তম ওভারে। ৪ উইকেট হাতে নিয়ে ২৩ রানের সমীকরণ ছিল প্রোটিয়াদের। সেই ওভারে ৫ রান খরচ করে ৩ উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার কাজটা কঠিন করে দেন এ পেসার। উইয়ান মুল্ডার, ব্রিটজ ও এনকাবায়োমজি পিটারকে ফিরিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে চতুর্থবার ৪ উইকেট পেয়ে যান মার্ক অ্যাডাইর।
শেষ ওভারে ১৮ রান দরকার ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। গ্রাহাম হিউমের করা ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৭ রান তুলতে পারে দলটি।