সিদ্ধিরগঞ্জে ভোটার তালিকায় নিবন্ধন করতে গিয়ে স্কুল শিক্ষককে লাঞ্চিতের অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে পূর্ব বিরোধের জেরে সফুরা খাতুন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের আমিনুল হাসান নামের এক শিক্ষককে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে জাতীয় পরিচয়পত্র ভোটার তালিকায় নিবন্ধন করতে আসা এক যুবকের বিরুদ্ধে। এঘটনায় ভুক্তভোগী আমিনুল হাসান সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মাসুম (৩৫) নামে ঐ যুবকের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিলনায়তন কক্ষে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়।

শিক্ষক আমিনুল হাসান এ ঘটনার একটি ভিডিও ক্লিপ ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন।

স্কুল সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক আমিনুল হাসান স্কুলের একজন ধর্মীয় বিষয়ের সহকারী শিক্ষক। তাঁর সাথে গত বছর ভোটার তালিকা নিবন্ধন নিয়ে ঘটনার বিবাদী মাসুমের পূর্ব বিরোধ ছিলো। এ বছর নির্বাচন কমিশন ও স্কুল কর্তৃপক্ষ থেকে আমিনুল হাসান কে ভোটার তালিকা হালনাগাতে কোন দায়িত্ব দেয়া হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুলের কর্মকর্তারা জানান, হুজুর শিক্ষক আমিনুল হাসানের স্বভাব চরিত্র অত্যন্ত উগ্র মেজাজের। তিনি তুচ্ছ বিষয় নিয়ে বিভিন্ন সময় সকলের সাথে বাক বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন এবং নানা সময় হুমকি ধামকি প্রদান করেন। স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও তার আচরণে বিরক্ত।

এ বিষয়ে শিক্ষক আমিনুল হাসান জানান, আমার সরকারি কাজে মাসুম বাঁধা প্রদান করেছে। সে আমাকে স্কুলে  প্রকাশ্যে গালিগালাজ করেছে। আমি তার বিচার দাবি করছি।

এ বিষয়ে বিবাদী মাসুম বলেন, এলাকার মাইকে ভোটার তালিকা হালনাগাদ চলছে শুনে সকালে স্ত্রীকে নিয়ে আমি সফুরা খাতুন বিদ্যালয়ে যাই। সেখানে গিয়ে প্রধান শিক্ষক রফিকুল সাহেব ও শিক্ষক ডালিয়া আমার স্ত্রীর ভোটার হওয়ার কাজ সম্পন্ন করে দেন। কাজ শেষ হওয়ার পর শিক্ষক আমিনুল আমার সামনে আসেন এবং অযথা বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। গত বছর শিক্ষক আমিনুল নির্বাচন কমিশনের প্রদত্ত ডিজিটাল ফর্মে নিবন্ধন না করে তার বাসায় থাকা ৩ বছর আগের পুরনো নির্বাচন কমিশনের ফরমে আমার স্ত্রীর ভোটার ফরম নিবন্ধন করেন। তার এ ভুলের ফলে আমার স্ত্রী গত ১ বছরেও জাতীয় পরিচয়পত্রের কার্ড হাতে পাননি। যার ফলে আমাদের নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। আজ শিক্ষক আমিনুল সামনে পড়লে প্রধান শিক্ষকের সামনে আমার গত এক বছরের আক্ষেপের কথা প্রকাশ করলে শিক্ষক আমিনুল আমার সাথে “তুই বেশি কথা কস! তোরে দেইখা নিমু, তোর পায়ের তলায় মাটি থাকবে না এসব কথা বলে” হুমকি প্রদান করেন। পরে একপর্যায়ে আমাদের দু’জনের মধ্যে বাক বিতন্ডা হয়।

মাসুম অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি দলীয় রাজনীতির সাথে জড়িত হওয়ায় শিক্ষক আমিনুল ইচ্ছে করে আমার স্ত্রীর ভোটার নিবন্ধনে ভুল করেছেন।

সফুরা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, স্কুলের সহকারী শিক্ষক আমিনুল সাহেব গত বছর মাসুমের স্ত্রীর ভোটার ফরমে ভুল করায় তাঁকে গত এক বছর নানা ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। কোথাও গিয়ে তিনি প্রতিকার পাননি। আজ এ বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তাঁদের দুজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। শিক্ষক আমিনুল হাসান কে এ বছর নির্বাচন কমিশন থেকে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কোন দায়িত্বে রাখা হয়নি বলে জানান প্রধান শিক্ষক।

ঘটনাস্থলে যাওয়া সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই হাসান জানান, এ বিষয়ে আমরা একটি অভিযোগ পেয়ে স্কুলে গিয়েছি। স্কুলের কমিটি তারা এ বিষয়ে দুই পক্ষকে ডেকে সমঝোতা করবে বলে ঠিক করেছেন।