টিপু-প্রীতি হত্যা মামলায় আ’লীগ নেতা আশরাফসহ ৩৩ জনের বিচার শুরু

রাজধানীর শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতি হত্যা মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ তালুকদারসহ ৩৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। একই সঙ্গে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২১ মে দিন ধার্য করেন। এর মাধ্যমে এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো। সোমবার (২৯ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক আলী হোসাইন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। অভিযোগ গঠনের সময় আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন। ২০২২ সালের ২৪ মার্চ রাত সোয়া ১০টার দিকে শাহজাহানপুরে ইসলামী ব্যাংকের পাশে বাটার শো-রুমের সামনে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এসময় গাড়ির পাশে রিকশায় থাকা সামিয়া আফরান প্রীতি (১৯) নামে এক কলেজছাত্রীও নিহত হন। এছাড়া টিপুর গাড়িচালক মুন্না গুলিবিদ্ধ হন। ওইদিন রাতেই শাহজাহানপুর থানায় নিহত টিপুর স্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সংরক্ষিত কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়। মামলার এজাহারে টিপুর স্ত্রী অভিযোগ করেন, ২০২২ সালের ২৪ মার্চ রাত সোয়া ১০টার দিকে ২০২ উত্তর শাহজাহানপুর মানামা ভবনের বাটার দোকানের সামনে পৌঁছামাত্রই অজ্ঞাতপরিচয়ের দুর্বৃত্তরা হামলা করেন। তারা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি গুলি করেন। ২০২৩ সালের ৫ জুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন শিকদার ৩৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। তদন্তে ৩৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা মেলে। তবে এক্সেল সোহেল নামে এক আসামির পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা না পাওয়ায় অব্যাহতির আবেদন করা হয়। এ ক্ষেত্রে বিচারের জন্য ৩৩ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। চার্জশিটে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও জাতীয় পার্টির একাধিক পদধারী নেতা আসামির তালিকায় রয়েছেন। সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরও আছেন আসামির তালিকায়। চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মারুফ আহমেদ মনসুর, বিদেশে পলাতক আন্ডারওয়ার্ল্ডের দুই সন্ত্রাসী জিসান ও ফ্রিডম মানিক, মতিঝিল থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম, মতিঝিল থানা জাতীয় পার্টির নেতা জুবের আলম খান রবিন, হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক সোহেল শাহরিয়ার, ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি মারুফ রেজা সাগর, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান বাবুল, ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সদস্য কাইল্যা পলাশ, একই ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক নেতা আমিনুল, ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ‘ঘাতক’ সোহেল, সুমন শিকদার মুসা, মুসার ভাগনে সৈকত, মুসার ভাতিজা শিকদার আকাশ, ইমরান হোসেন জিতু, মোল্লা শামীম, রাকিব, বিডি বাবু, ওমর ফারুক, ‘কিলার’ নাসির, রিফাত, ইশতিয়াক হোসেন জিতু, মাহবুবুর রহমান টিটু, হাফিজ, মাসুম ও রানা মোল্লা। তাদের মধ্যে ২৪ জনই গ্রেফতার হয়েছেন। এ হত্যা মামলায় মুসা, শুটার আকাশ ও নাসির উদ্দিন মানিক সেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।