আপনার সন্তান অন্তর্মুখী বা লাজুক? পরিচিত বা অপরিচিতদের সঙ্গে সামাজিকভাবে মেলামশায় স্নায়ুচাপ থেকে লাজুক স্বভাব গড়ে ওঠে। অন্যান্য বাচ্চাদের মতোই অন্তর্মুখী বাচ্চারা তাদের নিজস্ব প্রতিভা নিয়ে জন্মায়।যদিও লাজুক শিশুরা সবসময় অন্তর্মুখী হয় না, তবে এমন স্বভাবের বাচ্চারা নিজেদের ছোট্ট পৃথিবীতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। অন্য সব শিশুদের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে মেলামেশা করতে চাইলেও লজ্জা আর ভীতির কারণে অন্তর্মুখী বাচ্চারা সেটা করতে পারে না।
আপনি নিশ্চয়ই চান আপনার সন্তান আর দশটা শিশুদের মতো সমাজের সবার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলুক।বাচ্চা যদি কোনও পরিবেশে বা কোনও ব্যক্তির সঙ্গে মেলামেশা করতে অসুবিধা বোধ করে তাহলে তাকে কাছে বসিয়ে আদর করে, কারণ জানার চেষ্টা করুন। নিজেকে এই বলে সান্ত্বনা দেবেন না যে, বাচ্চা অন্তর্মুখী তাই ওরকম ব্যবহার করছে। সেজন্য লাজুক স্বভাবটি কাটিয়ে উঠতে সন্তানকে সাহায্যের জন্য অভিভাবক হিসেবে আপনারও কিছু বিশেষ করণীয় আছে।
চলুন দেখে নিই কী কী সহজ উপায়ে সন্তানকে তাদের লজ্জা আর অন্তর্মুখী স্বভাব কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করতে পারেন-
>আপনি যদি সন্তানকে লাজুক ভাবেন, তাহলে অজান্তেই তার লাজুকতা আর অন্তর্মুখী স্বভাবটি আরও বাড়তে থাকে। এতে নিজের লাজুক স্বভাবটি থেকে আপনার সন্তান বের তো হতে পারেই না, বরং আরও বেশি করে অন্তর্মুখিতার চাদরে নিজেকে মুড়িয়ে নেয়।তাই নিজের সন্তানকে কখনো লাজুক ভাববেন না, এমনকি সমাজের মানুষের সামনেও তাকে সেভাবে উপস্থাপন করবেন না। বরং সমাজের সবাইকে বোঝান যে পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে চারপাশের অবস্থা পর্যবেক্ষণে আপনার সন্তানের খানিকটা সময় লাগছে।
>যেসব শিশু নিজের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী, তারা তুলনামূলক কম সংকোচে ভোগে। আপনার সন্তানের গোপন প্রতিভার জায়গাটা আবিষ্কার করুন। সে কি শিল্প-সাহিত্যে বেশি আগ্রহী? খেলাধুলা কি তার বেশি পছন্দ? সন্তানের প্রতিভার জায়গার ওপর জোর দিয়ে যদি তাদের ভালো কিছু করতে অনুপ্রাণিত করেন, তাহলে সে নিজেকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবে। নিজেকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী থাকলে সমাজের যেকোনো পরিস্থিতির সঙ্গে আপনার সন্তান সহজেই খাপ খাইয়ে নিতে পারবে।
>আপনার সন্তান যখন কোনো সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে থাকে, তখন তার পাশে থেকে তাকে নিজের মতো করে চলতে দিন। এরপর ধীরে ধীরে তার কাছ থেকে দূরে সরে যেতে পারেন, কারণ তারা এতে আরও বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।
>সমাজের যেকোনো পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে সন্তা্নকে সহায়তা করুন। সন্তান নিজের লাজুক স্বভাব কাটিয়ে উঠতে থাকলে তাকে প্রশংসার মাধ্যমে উৎসাহিত করুন। যদি সবার সামনে সন্তান অস্বস্তি বোধ করে, তাহলে তাকে ব্যক্তিগতভাবে ভালো কিছু করতে উৎসাহ দিন।
>আপনার সন্তানকে স্থির হওয়ার জন্য কিছুটা সময় দিন। আলাপচারিতার জন্য সন্তানকে সরাসরি অন্য শিশুদের কাছে পাঠাবেন। বরং সন্তান কী চায়, সেটি তাদের নিজেদেরই বেছে নিতে বলুন। সন্তানের সঙ্গে কথা বলার সময় গলার স্বর নিচু রাখুন।
>এই ধরনের বাচ্চাদের কিছুটা স্বাধীনতা দিতে হবে। সব সময় ওদের প্রোটেক্টর হয়ে থাকলে চলবে না। ওরা যে-কাজটা করতে পারছে না আগ বাড়িয়ে নিজে করে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। এর ফলে ওদের মনে হতে পারে, কোনও কাজ করতে ওরা অক্ষম।