গাজীপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নারী পোশাক শ্রমিক নিহত

কোনাবাড়ীর ইসলাম গার্মেন্টসে সেলাই মেশিন অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন তিনি

নিম্নতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা করার দাবিতে বেতন গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। বিক্ষোভরত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে এক নারী নিহত হয়েছেন। বুধবার (৮ নভেম্বর) সকালে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান তিনি। নিহত পোশাক শ্রমিকের নাম আঞ্জুয়ারা খাতুন (৩০)। তিনি সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার চর নাটিপাড়া এলাকার জামাল হোসেনের স্ত্রী। কোনাবাড়ীর ইসলাম গার্মেন্টসে সেলাই মেশিন অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন তিনি। কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আশরাফ উদ্দিন ঢাকা ট্রিবিউনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। শ্রমিকদের অভিযোগ, বুধবার সকালে গাজীপুর সিটির কোনাবাড়ী, জরুনসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। তাদের আন্দোলনে গুলি ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এ সময় অন্তত ১০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তাদের মধ্য থেকে পরে আঞ্জুয়ারা মারা যান। অন্যদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিক্ষোভ চলাকালে শ্রমিকেরা যানবাহন ভাঙচুর ও সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অগ্নিসংযোগ করেন। ওসি আশরাফ উদ্দিন বলেন, “শ্রমিকেরা আঞ্চলিক সড়কগুলোয় আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে রাখেন। এ ছাড়া ভাঙচুরের চেষ্টা করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়।” পুলিশ, শ্রমিক ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় বেতন বাড়ানোর দাবিতে পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করে আসছিলেন। এরপর গতকাল মঙ্গলবার মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা নির্ধারণ করে সরকার। কিন্তু এতে শ্রমিকেরা সন্তুষ্ট নন। তাই বুধবার সকাল থেকে গাজীপুরের কোনাবাড়ী, জরুন, বাইমাইলসহ বিভিন্ন এলাকায় তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে শ্রমিকেরা বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে কাঠ ও টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেন। এ ছাড়া বিভিন্ন যানবাহন ভাঙচুরের চেষ্টা করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এ সময় শ্রমিকেরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পুলিশ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে ওই এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শিল্প পুলিশ, থানা-পুলিশের পাশাপাশি বিজিবির সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।