বিএনপির নিখোঁজ দুই নেতার অবস্থান জানাতে হাইকোর্টের নির্দেশ

হাইকোর্ট বলেছেন, ‘কোনো নাগরিক নিখোঁজ হলে তাকে খুঁজে বের করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। মানুষের জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। এক ঘণ্টাও মানুষের জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সন্তান হারানোর ব্যথাটা কত কষ্টের তা পরিবারই জানে।’ বগুড়ার কাহালু উপজেলা বিএনপির দুই নেতা দেলোয়ার হোসেন ও আনোয়ার হোসেন কোথায় কী অবস্থায় আছেন তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আগামী ৪ জানুয়ারি পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। বগুড়ায় নিখোঁজ হওয়া দুই বিএনপি নেতার সন্ধান চেয়ে করা রিটের শুনানি নিয়ে বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি আবু তাহের মো.সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এসময় দেলোয়ার হোসেন ও আনোয়ার হোসেনকে আদালতে হাজির করতে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ও রুহুল কুদ্দুস কাজল। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুল ইসলাম সিদ্দিকী, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সাইফুল আলম ও তাহমিনা পলি। শুনানি চলাকালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের উদ্দেশ করে হাইকোর্ট বলেন, “কোনো নাগরিক নিখোঁজ (মিসিং) হলে তাকে খুঁজে বের করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। মানুষের জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। এক ঘণ্টাও মানুষের জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সন্তান হারানোর ব্যথাটা কত কষ্টের তা পরিবারই জানে।” গত ২৬ ডিসেম্বর বগুড়ার কাহালু উপজেলা বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক অনোয়ার হোসেন হৃদয় ও উপজেলা বিএনপির ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনের সন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করে তাদের পরিবার। দুই বিএনপি নেতার পরিবারের পক্ষে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল এ রিট দায়ের করেন। পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজি), গোয়েন্দা পুলিশ, র‌্যাব, বগুড়ার কাহালু থানার ওসিসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়। এর আগে, ২০ ডিসেম্বর বগুড়া প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন হৃদয়ের স্ত্রী আঁখি বেগম অভিযোগ করেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তার স্বামীকে তুলে নিয়ে গেছে। সংবাদ সম্মেলনে আঁখি বেগম বলেন, “গত ১৪ ডিসেম্বর তার স্বামী তার কর্মস্থল বগুড়ার শেরপুর পল্লী উন্নয়ন অ্যাকাডেমি থেকে ফেরার পথে অফিসের গেট থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ডিবি (গোয়েন্দা পুলিশ) পরিচয়ধারী সাদা পোশাকে ৩-৪ জন তাকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। যার সন্ধান আজও পাওয়া যায়নি।”