আ.লীগ নেতাদের বাড়ি-গাড়িতে আগুন দিয়ে ভাংচুর করে বিএনপির নেতাকর্মীরা

প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর গতকাল সোমবার বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নারায়ণগঞ্জের মহানগরের আওয়ামী লীগের সদস্য এবং নারায়ণগঞ্জের সিটি কর্পোরেশন জালকুড়ি ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোবারক হোসেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বিএনপি নেতাকর্মীরা বাড়িতে ও গাড়িতে আগুন দিয়েছে। বিগত ১৬ বছর বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল তারা। আওয়ামী লীগ একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক দল। এ দল দেশ-বিদেশে শান্তির দল হিসাবে গণ্য। আমরা যারা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য পদে ছিলাম কখনো কাউকে সন্ত্রাসী হামলা বা চাঁদাবাজি করতে দিতাম না। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের বড় একটা রাজনৈতিক সংগঠন। কিছু মানুষ এ দল সম্পর্কে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে থাকে। আওয়ামী লীগের একটু ভুলের জন্য আজ বাংলাদেশে নেতা-কর্মীদের নির্যাতিত হতে হচ্ছে। ছাত্র আন্দোলনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে সারা দুনিয়ার মানুষ দেখছেন, কি হচ্ছে! তবে কিছু বলার মতো শক্তি নাই । তবুও বলতে হয় শুধু আমাদের বেঁচে থাকার জন্য। আগস্টের ৫ তারিখ যখন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে হঠাৎ ভারতে চলে গেলেন তখনও অনেকের কাছে বিশ্বাস করার মতো বিষয়টি ছিল না। আগস্টের ৫ তারিখ পর থেকে আমাদের ব্যাবসা- বানিজ্য দোকান পাঠ টাকা পয়সা সব শেষ । মনে হয়ে ছিলো আমার দেশে আমি রোহিঙ্গা। এমনকি আমার সন্তান কে আগুনে পুরে মারলো এইটা কি করে সম্ভব আমি চিন্তা করে পাচ্ছি না কার কাছে এই বিচার দিবো আল্লাহ তুমি মেহেরবান তুমি সব কিছুর মালিক। কেন তুমি আমাকে বাঁচিয়ে দিলা আমার মেয়েকে মরতে হলো। আমার সন্তানকে বাঁচিয়ে রাখতো। টাকা গেছে বাড়ি গাড়ি সব গেছে চিন্তা না শুধু আমার সন্তানকে যদি বাঁচিয়ে রাখত তাহলে আমার কাছে আর কিচ্ছু লাগতো না। আগস্টের ৫ তারিখ রাতে শুরু হয় আমাদের উপর হামলা।
ছাত্ররা এবং ছাত্রদের সাথে বিএনপির নেতাকর্মীরা মিলে শুরু করে আমাদের ঘরে বাড়িতে হামলা। আগস্টের ৫ রাতে আমার নিজস্ব গাড়ি মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয় । এবং আমার বাড়িতে সন্ত্রাসীরা তান্ডব চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতি করে। আমাকে মারার জন্য চেষ্টা করেন। তখন আমি পালিয়ে ইন্ডিয়া চলে যাই। তখন থেকেই শুরু হয় আমার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা। আমার নামে পাঁচটা মাডার কেসের মামলা হয় । যাতে আমি বাড়িতে থাকতে না পারি ।
আমি আফিস বন্ধ করে রাতে যখন বাসায় ফিরি তখন ছাত্রছাত্রী ও বিএনপির নেতাকর্মীরা আমার গাড়ি আটকিয়ে দেয়। তারা এ সময় আমার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তখন আমি বাঁচার জন্য গাড়ি নিয়ে কোনরকম একটু সামনে এগুলে অনেক ছাত্রছাত্রী ও জামায়াতের কর্মীরা গাড়ি ভাঙচুর করে। অমি কোন রকম পালিয়ে আত্মরক্ষা করলেও রাতে ওরা সবাই মিলে বাসায় গিয়ে পরিবারের উপর হামলা চালায়। এতে আমার ব্যাপক ক্ষতি হয়। আগস্টের ৫ তারিখের পর থেকে আমার বাড়িতে অনেক বার আন্দোলনকারী এবং বিএনপি নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে পরিবারের উপরে হামলা করে । আমি কোথায় আছি তা জানতে চায়। না বলায় আমার ছেলেমেয়ের স্কুল থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। আমার ছেলে মেয়েকে স্কুলে পড়তে দেওয়া হবে না বলে কর্তৃপক্ষ জানায়। জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি মাস আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়িসহ আমাদের অনেকের বাড়িঘর বিএনপির নেতাকর্মীরা আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। এমনকি পরিবারের লোকজন যখন ঘুমিয়ে ছিলেন তখন আমার বাড়িতে বিএনপির নেতাকর্মীরা আগুন দেয়। হঠাৎ আগুন দেখে ছেলে মেয়ে ভয় পায়। এমনকি আগুন দেওয়ার পরের দিন আমার ছোট মেয়ে মারা যায়। আমি ঘটনার কি প্রকাশ করব আপনারা সকলেই পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলগুলোতে দেখেছেন কি হচ্ছে বাংলাদেশে। আমাদের দেশে আওয়ামী লীগে ক্ষমতা থাকা কালীন বাংলাদেশে ১৪ লক্ষ রোহিঙ্গা আশ্রয় পেয়েছে। এখন আমাদের নিজেদের দেশে আমরা রোহিঙ্গা হয়ে গেছি। তাই আমার নিজের নিরপাত্তার কথা চিন্তা করে আমি আপনাদের দেশে আশ্রয় পাওয়ার জন্য আকুল আবেদন করছি।