সিলেটে বিএনপির ৪৩ নেতাকে আজীবন বহিষ্কার

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেওয়া ৪৩ নেতাকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে বিএনপি।  সোমবার (৫ জুন) রাতে দলটির দফতর সম্পাদক রুহুল কবীর রিজভি স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।

মঙ্গলবার (৬ জুন) সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত ৩ জুন রাতে সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপি নেতাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল দলটি। পরে বিএনপি জানিয়েছে, কারণ দর্শানোর নোটিশে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের জবাব চেয়ে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। ওই সময়ের মধ্যে পাঁচজন নেতা জবাব দিলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে কেউ সরে আসেননি। এ কারণে ওই ৪৩ নেতাকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

বহিষ্কৃতরা হচ্ছেন- মেয়র প্রার্থী ২৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন, সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ১ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ তৌফিকুল হাদি, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ফরহাদ চৌধুরী শামীম, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য নজরুল ইসলাম মুনিম, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য এবিএম জিল্লুর রহমান উজ্জল, ৯ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের বর্তমান নারী কাউন্সিলর ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী, সিলেট মহানগর মহিলা দলের সভাপতি অ্যাডভোকেট রোকসানা বেগম শাহনাজ, সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী সিলেট জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আলতাফ হোসেন সুমন, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক উসমান হারুন পনির, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা গোলাম মোস্তফা কামাল, গউছ উদ্দিন পাখি, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেলওয়ার হোসেন নাদিম, ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য মুফতি কমর উদ্দিন কামু, ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান মিঠু, ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মো. কামাল মিয়া ও সদস্য খালেদ আকবর চৌধুরী, আমিনুর রহমান খোকন, শাহেদ সিরাজ, ১০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান জুবের, ১১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য আব্দুর রহিম মতছির, ১৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য মুজিবুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সালমান চৌধুরী শাম্মী, ২৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি মামুনুর রহমান মামুন, এমসি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি বদরুল আজাদ রানা, ২৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য হুমায়ুন কবির সুহিন, ২৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি সেলিম আহমদ রনি।

এছাড়াও জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী আব্বাস, বরইকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সহসাধারণ সম্পাদক জাবেদ আমিন সেলিম, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক রাজু মিয়া, বরইকান্দি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি সানর মিয়া, টুলটিকর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল মুকিত, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট হেদায়েত হোসেন তানবীর, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য দুলাল আহমদ, জেলা বিএনপি নেতা দেলওয়ার হোসেন জয়, মহানগর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আব্দুল হাছিব, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সহ-ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক সুমন আহমদ সিকদার, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপি নেতা সাহেদ খান স্বপন, বরইকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির নুরুল ইসলাম মাসুম, সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী সিলেট জেলা মহিলা দলের সভাপতি সালেহা কবির শেপী, মহানগর মহিলা দলের সহ-সভাপতি রুহেনা বেগম মুক্তা, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, সিলেট ইউনিটের সদস্য অ্যাডভোকেট জহুরা জেসমিন ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি কামরুন নাহার তান্নি।

দলীয় সূত্র জানায়, বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষনা অনেক আগেই দিয়ে রেখেছে বিএনপি। ঘোষণা অনুযায়ী চলমান সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলোতেও অংশ নেয়নি দলটি। নির্বাচনে দলের কোন নেতাকর্মী প্রার্থী না হওয়ার কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। নির্দেশ অমান্য করে কেউ প্রার্থী হলে আজীবনের জন্য বহিষ্কার হবেন, দলের পক্ষ থেকে এমন হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।

সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী জানান, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে সিটি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় তাদেরকে বহিষ্কার করা হয়। দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে বিএনপির জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য, সিসিকের বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের টানা চারবারের কাউন্সিলর রেজাউল হাসান কয়েস লোদী নির্বাচন বর্জন করছেন।

এমএফ