ঘূর্ণিঝড় মোখা : আঘাত হানলো সেন্টমার্টিনে

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেছেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ ১০০ কিলোমিটার গতিবেগে সেন্টমার্টিনে আঘাত হেনেছে। ঝড়ো বাতাসে সেন্টমার্টিন দ্বীপের ঘরবাড়ি ও বিল্ডিং কাঁপছে। সেই সঙ্গে প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের মূল কেন্দ্র বিকেল ৩টার দিকে আঘাত হানবে।

রোববার দুপুর ১টায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাব সকাল থেকে সেন্টমার্টিনে পড়তে শুরু করে। সেখানে আমাদের ইনচার্জের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি আমাকে জানিয়েছে- বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটের দিকে বাতাসের গতিবেগ ছিল ৮০ কিলোমিটার। বেলা ১টার দিকে সেটা বেড়ে ১০০ কিলোমিটার হয়ে গেছে। প্রতি মুহূর্তে বাতাসের গতিবেগ বাড়ছে। ঝোড়ো বাতাসের কারণে দ্বীপের বিল্ডিং কাঁপছে।

তিনি আরও জানান, ঘূর্ণিঝড়ের মূল কেন্দ্র বিকাল ৩টার দিকে আঘাত হানবে। এরপর থেকে মোখার প্রভাব কমতে শুরু করবে। মোখার মূল কেন্দ্র মিয়ানমারের দিকে হওয়ায় বাংলাদেশের ঝুঁকি কমে গেছে।

আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ‘মোখা’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (১৯.৭° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯২.৪° পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে। এটি রোববার (১৪ মে) দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ২৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল।

কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রমরত ঘূর্ণিঝড়টি সন্ধ্যা নাগাদ সিটুয়ের (মিয়ানমার) কাছ দিয়ে কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

এর আগে, আবহাওয়া অধিদফতরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-২০) বলা হয়েছে, উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকার অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ অগ্রসর হয়েছে। এটি রোববার (১৪ মে) সকাল ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ২৮৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ২০০ কি.মি. দক্ষিণে, মোংলা- সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৪৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বে অবস্থান করছিল।

বর্তমানে ঝড়টি কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করছে। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে রোববার (১৪ মে) বিকাল নাগাদ সিটুয়ের (মিয়ানমার) নিকট নিয়ে কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম শেষ করতে পারে।

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুদ্ধ রয়েছে। কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

অতি ভারি বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধসও হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেখা পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে।