গাজীপুর মহানগরের পূবাইলে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে শেখ মুজিবুর রহমানকে অপহরণের চেষ্টা করলে দুই অপহরণকারীকে আটক করে পুলিশে দেয় জনতা।
বুধবার রাতে অপহৃত মুজিবুর রহমান বাদী হয়ে আইনুল কবির চৌধুরী ও নাসিমুল গনির নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জনকে আসামি করে পূবাইল থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন।
বৃহস্পতিবার সকালে গ্রেফতারদের আদালতের মাধ্যমে গাজীপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে পূবাইল থানার ওসি শেখ আমিরুল ইসলাম দৈনিক দেশ বর্তমান কে নিশ্চিত করেন।
অপহৃত শেখ মুজিবুর রহমান(৫৪) বর্তমানে ঢাকা মহানগরীর উত্তরা পূর্ব থানার ৪নং সেক্টর এলাকায় বসবাস করেন তিনি মৃত আইনউদ্দিন শেখের ছেলে। ফরিদপুরের গোপালগঞ্জে তার পৈতৃক ঠিকানা।
গ্রেফতার আসামিরা হলেন আইনুল কবির চৌধুরী (৫২) চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই থানার হাইতকান্দি গ্রামের মৃত আমির আহমেদ চৌধুরীর ছেলে ও নাসিমুল গনি (৪২) নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানার চরবালি গ্রামের মৃত আবদুস সোবহানের ছেলে।তারা উভয়ে ঢাকার মহাখালী ও কদমতলী এলাকায় বসবাস করেন।
বুধবার বিকালে জমি নিয়ে করা মামলার হাজিরা দিয়ে গাজীপুর আদালত থেকে নিজের প্রাইভেট গাড়িতে করে ফেরার পথে পূবাইলের মেঘডুবি এলাকায় পৌঁছালে এই অপহরণের ঘটনা ঘটে।
মামলাসুত্রে জানা যায় পূবাইল থানার কুদাব পশ্চিমপাড়া মৌজায় ক্রয়সূত্রে ১৬.২৫ শতক জমির ওপর ৫টি টিনসেড ঘর তৈরী করে বোতলজাত পানির কারখানা চালু করেন মুজিবুর রহমান।ব্যবসায়ীক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় ২০১৭ সালে এককোটি ৫ লাখ টাকায় দামদর করে বিক্রির উদ্দেশ্যে আইনুল কবির চৌধুরীর নিকট জমির বায়নাবাবদ অগ্রীম ২০ লাখ টাকা নেন তিনি। মুজিবুর রহমানের দাবি জমির রেজিষ্ট্রেশন খরচ কমাতে সরকার নির্ধারিত মৌজার শতাংশ মূল্য এড়িয়ে বায়না দলিলে ২৫ লাখ টাকা জমির মূল্য উল্লেখ করেন আইনুল কবির।ফলে বায়না দলিলের মেয়াদান্তে বাকি ৫ লাখ টাকা আদালতে পরিশোধ করে আসামি আইনুল সুচতুরভাবে জমির রেজিষ্ট্রেশন চেয়ে মামলা করেন।অপর পক্ষে জমিদাতা মুজিবুর বায়না দলিল বাতিল চেয়ে মামলা করেন আদালতে। দুটি মামলা-ই গাজীপুর আদালতে চলমান।
বুধবার বিকালে জমি নিয়ে বিরোধের মামলায় হাজিরা দিয়ে নিজ গাড়িতে করে ফেরার পথে বিকাল ৩ টার দিকে পূবাইল থানার মেঘডুবি পশ্চিমপাড়া জোড়পুকুর যুব উন্নয়ন ক্লাবের সামনে পাকা রাস্তার অজ্ঞাতনামা ০৭/০৮ জনকে নিয়ে আইনুল ও নাসিমুল দুটি হাইয়েচ গাড়ি দিয়ে পথরোধ করে।পরে জোরপূর্বক মুজিবুরকে একটি হাইয়েচ গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যায়। মুজিবুরের গাড়ি চালক ও তার ডাক-চিৎকারে স্থানীয় রাজীব,ইমাম ও মান্নান অপহরনকারীদের দুটি গাড়ির পথরোধ করলে জনতাও তাদের ঘিরে ফেলে। উপায়ন্তর না দেখে ভিকটিম মুজিবুর,আসামি আইনুল ও নাসিমুলকে গাড়ি থেকে ফেলে অপহরণের কাজে ব্যবহার করা হাইয়েচটি দুটি নিয়ে অজ্ঞাতরা পালিয়ে যায়।পরে পূবাইল থানা পুলিশ ভিকটিমসহ আসামিদের থানায় নিয়ে আসে।
এ বিষয়ে থানায় উপস্থিত হয়ে আইনুল কবিরের স্ত্রী জানান শেখ মুজিবুর রহমান গোপালগঞ্জের দাপট দেখিয়ে সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধের পরও জমি দিচ্ছে না।মিথ্যা মামলা দিয়ে দু’দুবার জেল খাঁটিয়েছে আমার স্বামীকে। আমাদেরকে জমির দখল বুঝিয়ে দিয়ে আবার উচ্ছেদ করে মুজিবুরের আপন শ্যালককে থাকতে দিয়েছেন।আমিও তদন্তেপূর্বক সুষ্ঠু বিচার চাই।
পূবাইল থানার ওসি শেখ আমিরুল ইসলাম জানান খবর পেয়ে দুই আসামিসহ ভিকটিম উদ্ধার করেছি।
মামলা হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।