রূপগঞ্জে ডকইয়ার্ডের স্যান্ডব্লাস্টিং বন্ধে এলাকাবাসীর মানববন্ধন 

রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া ইউনিয়নের ভাওয়ালিয়া পাড়ার ৭নং ওয়ার্ডে শীতলক্ষ্যা নদীর তীর দখল করে পরিবেশ দূষণকারী ডকইয়ার্ডের স্যান্ড ব্লাস্টিংয়ে সৃষ্ট শব্দ ও পরিবেশ  দূষণ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী। মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল  থেকে তারা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক স্যান্ড ব্ল্যাস্টিং বন্ধের দাবি জানান। এছাড়া নদীর সীমানা দখল ও সরকারি হালট দখল মুক্ত করতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে কায়েতপাড়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের শত শত নারী-পুরুষ, শিক্ষক- শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও মসজিদের মুসল্লীরা এ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, এসব ডকইয়ার্ডে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে স্যান্ড ব্লাস্টিংয়ে সৃষ্ট ধুলায় বায়ুদূষণ হচ্ছে। এসব ডকইয়ার্ডে দিন-রাত পর্যন্ত এই দূষণ চলছে। এতে এলার্জি, চর্ম, শ্বাসকষ্টজনিত নানা অসুখে আক্রান্ত হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সরকারি হালট দখল, পরিবেশ ও বায়ু দূষণ নিয়ে স্থানীয়ভাবে বারবার অভিযোগ করার পরও বিষয়টিতে কর্ণপাত করেছেন না ডকইয়ার্ড মালিকেরা বলে দাবি এলাকাবাসীর। তাই বাধ্য হয়ে জেলা প্রশাসক, ইউএনও এবং  পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার হয়েছে।
মানববন্ধনে অংশ নেয়া সাইফুল ইসলাম বলেন, এতদিন আবাসিক এ এলাকার আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান জায়েদ আলী সহ নেতাদের ও পরিবেশ অধিদফতরের অসাধু কর্মকর্তা আর সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে ভাওয়ালিয়া পাড়া শীতলক্ষ্যা নদী পাড়ের সরকারি জমি বালু দিয়ে ভরাট করে মিজান ডকইয়ার্ড, তুহিন ডকইয়ার্ড ও মালেক ডকইয়ার্ড সহ বেশ কয়েকটি ডকইয়ার্ড কারখানা গড়ে উঠেছে। মালেক ডকইয়ার্ডের নিজস্ব জমি রয়েছে ৩০/৪০ ফিট। শীতলক্ষ্যা নদী পাড়ের সরকারি ৪০০/৫০০ ফিট জমি তারা দখলে নিয়ে বালু ভরাট করে ডকইয়ার্ডের কার্যক্রম চালাচ্ছে। সাবেক চেয়ারম্যান জায়েদ আলীর সহযোগীতায় সরকারি হালটও নেয়া হয়েছে মালেক ডকইয়ার্ডের দখলে। ২৪ ঘণ্টাই চালু থাকে ডকইয়ার্ডগুলো। শব্দদূষণে বাড়িঘরে থাকাও কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। স্যান্ড ব্লাস্টিংয়ের কারণে ঘরবাড়ি ধুলোয় ভরে যাচ্ছে। মানুষ ঠিকভাবে দম নিতে পারে না। ঠান্ডা, শ্বাসকষ্ট লেগেই থাকে সারাবছর। অনেকে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। তারা অবিলম্বে আবাসিক এলাকায় এসব ডকইয়ার্ড  কারখানা বন্ধ চান।
মানববন্ধনে অংশ নেয়া এক মুসল্লী বলেন, মসজিদে শব্দের কারণে আমরা ঠিকমত নামাজ আদায় করতে পারি না। অনেক সময় তীব্র শব্দের কারণে মসজিদ কেঁপে ওঠে। এছাড়া ধুলাবালির কারণে ফ্যান ও এসি চালাতে সমস্যা হয়। সব সময় মসজিদের দরজা জানালা বন্ধ করে রাখতে হয়।
এসময় একজন অভিভাবক বলেন, সন্ধ্যার পর সন্তানরা যখন পড়তে বসে ডকইয়ার্ডের শব্দ দূষণের কারণে তারা ঠিক মত পড়ালেখায় মনোযোগ পারে না। আমরা চাই আবাসিক এ এলাকা থেকে অন্যত্র ডকইয়ার্ড  স্যান্ড ব্ল্যাস্টিং এসব কারখানা গড়ে তোলা হোক।
এসময় বক্তব্যে বিক্ষোভ মিছিল থেকে শব্দ দূষণ, বায়ু দূষণ, পরিবেশ দূষণ, সরকারি হালট দখল মুক্ত ও নদী দূষণ মুক্ত করার দাবি জানান।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক এ.এইচ.এম রাশেদ বলেন, এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ডকইয়ার্ড নিয়ে একটি অভিযোগ দেয়া হয়েছে। আমরা দুই পক্ষকে শুনানির জন্য ডাকবো। দুই পক্ষকে ডেকে সিদ্ধান্ত দেয়ার চেষ্টা করব যদি আমরা এটা সমাধান না করতে পারি তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো তারা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিবেন।