এবার কারণ ছাড়াই বাড়ছে চিনির দাম

এবার কারণ ছাড়াই ঊর্ধ্বমুখী চিনির বাজার। খুচরায় যা কেনার জন্য গুণতে হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৫০ টাকা পর্যন্ত। অথচ মাত্র কয়েকদিন আগে দর বেঁধে দেয়া হয় ১৩০ টাকা। বিপরীতে বাজার ঠিক রাখতে আমদানি শুল্কেও ছাড় দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।  ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) জটিলতাসহ সার্বিক অনিয়ম ঠেকাতে না পারলে সংকট আরও ঘনীভূত হতে পারে। আর বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে আরও অসহায় হয়ে পড়েছে রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলো। ক’দিন আগে যে চিনি কেজিপ্রতি খুচরায় সর্বোচ্চ ১৩০ টাকায় বেঁধে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, তা এখন পাইকারিতে কিনতে হচ্ছে ১৩৫ টাকার বেশিতে। আর খুচরায় তা উঠেছে ১৫০ টাকার ঘরে। অথচ এর পেছনের কারণ জানেন না কেউই। এক বিক্রেতা বলেন, প্রতি কেজি চিনির এমআরপি ১৩৫ টাকা। কিন্তু আমি কিনছি ১৩৭ টাকায়। ফলে আমাকে ১৪০ টাকায় বিক্রি করতেই হবে। বাজারে ভোগ্যপণ্যটির কোনও সংকট নেই। শুধু রেটের সমস্যা।  এক ক্রেতা বলেন, কত টাকায় এলসি হয়েছে ব্যাংকে সেই তালিকা আছে। সরকার ও বাণিজ্যিক মন্ত্রণালয় তা জানে। তারাই আমদানিকারকদের বলে দিতে পারে- এত টাকা মুনাফা করবা এবং এত টাকায় বিক্রি করা। সেটা থেকে ব্যবসায়ীরা ২ থেকে ৪ টাকা লাভ করবে। তাহলেই বাজার ঠিক থাকবে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গেলো অক্টোবরে চিনির দাম কিছুটা কমেছে আগের মাসের তুলনায়। একই সঙ্গে টনপ্রতি আমদানি শুল্ক অর্ধেকে নামিয়েছে এনবিআর। তবে ডলারের অস্বাভাবিক দামে সব ভেস্তে যাচ্ছে বলে দাবি আমদানিকারকদের। বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচন ঘিরে যেন আরও নিষ্প্রাণ হয়ে গেছে বাজার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা সরকারি সংস্থাগুলো। বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতির (এফবিসিসিআই) পরিচালক মো. আবুল হাশেম বলেন, এটা একদিনের সমস্যা নয়। ডলার সংকট না কাটলে এই সমস্যা লেগেই থাকবে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক  খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, এই ধরনের অস্থির সময়কালে শুল্ক ছাড় দিলে বাজারে সেটার খুব একটা প্রভাব পড়ে না। এক্ষেত্রে সুবিধাটা পায় আমদানিকারকরাই। চাহিদা ও জোগানের সমন্বয় নিশ্চিতে সরকারকেই কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি। উল্লেখ্য, বিশ্ববাজারে দাম কমলেও দেশে চড়া দামে অস্বস্তি জনসাধারণের।