শ্রীপুরে বিদ্যালয়ের পাশে ময়লার ভাগাড়ঃ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলছে দূষণ

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার রাজেন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশেই গড়ে উঠেছে বিশাল ময়লার ভাগাড়। দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা এসব আবর্জনা থেকে ছড়াচ্ছে তীব্র দুর্গন্ধ, যা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ আশপাশের বাসিন্দাদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের সামনের রাস্তার পাশে স্তূপ করে ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। শুধু তাই নয়, বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশ ঘেঁষে থাকা ড্রেন দিয়ে বাজার ও আশপাশের বাড়িগুলোর ময়লা পানি সড়কে উপচে পড়ছে। ফলে শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা নাক চেপে চলাফেরা করতে বাধ্য হচ্ছেন।
রাজেন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তানিয়া আক্তার জানান, “বহুবার অনুরোধ করার পরও বাজার ও আশপাশের বাসাবাড়ির লোকজন নিয়মিত এখানে ময়লা ফেলে যাচ্ছে। দিনে না ফেললেও এখন রাতের বেলা ফেলা হচ্ছে। এতে দুর্গন্ধে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বিষয়টি প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে।”
রাজেন্দ্রপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলেন, ময়লার ভাগাড় আশেপাশে বাসাবাড়ী এবং মাদ্রাসার ময়লাগুলো ফেলা হয়েছে। এবং সবার সাথে কথা বলে ময়লা ভাগাড় দ্রুত নিস্বাকশন ব্যবস্থা করছি।
অভিভাবকরাও এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এক অভিভাবক বলেন, “আমাদের বাচ্চারা স্কুলে গিয়ে ময়লার দুর্গন্ধে ক্লাসও করতে পারছে না, খেলাধুলাও করতে পারছে না। এতে ওদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে প্রভাব পড়ছে।”
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফাতেমা নাছরিন জানান, “বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান, ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।”
রাজেন্দ্রপুর জনকল্যাণ বাজার কমিটির সভাপতি মশিউর রহমান লিটন বলেন, “ময়লার ভাগাড় শুধু স্বাস্থ্য নয়, পুরো পরিবেশের জন্য ভয়াবহ হুমকি। শিশুদের জন্য এর প্রভাব আরও গুরুতর। নানা রোগবালাইয়ের আশঙ্কা রয়েছে।”
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজীব আহমেদ বলেন, “বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের দ্রুত পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, খুব শিগগিরই বিদ্যালয়সংলগ্ন এলাকাটি দূষণমুক্ত হবে।”
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও এবিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
স্থানীয়দের দাবি, বিদ্যালয়ের পাশ থেকে ময়লার ভাগাড় সরিয়ে সেখানে একটি স্থায়ী আবর্জনা নিষ্পত্তি কেন্দ্র গড়ে তোলা হোক। পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষায় জনগণকে আরও সচেতন করতে নিয়মিত প্রচার-প্রচারণার ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তারা।