মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত যুদ্ধাপরাধী ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি মো. আজহার আলী শিকদারকে (৬৮) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল রোববার ঢাকার আশুলিয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সোমবার সকালে র্যাব-২ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. ফজলুল হক এ তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃত আজহার আলীর বাড়ি বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলায়। তিনি মৃত হাজী আহম্মদ আলী শিকদারের ছেলে।
র্যাব-২ জানায়, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাগেরহাটের কচুয়া ও মোরেলগঞ্জ এলাকায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী হিসেবে মো. আজহার আলীসহ যুদ্ধাপরাধী রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, অবৈধভাবে আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি ঘটনায় সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন। এসব ঘটনার মধ্যে আছে দুজন বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ ২২ জনকে হত্যা, ৪০ থেকে ৫০টি বাড়ির মালামাল লুণ্ঠনের পর আগুনে পুড়িয়ে সম্পূর্ণ ধ্বংস করা। এ ছাড়া দুজনকে অমানুষিক নির্যাতনে গুরুতর জখম এবং চার নারীকে দীর্ঘদিন রাজাকার ক্যাম্পে আটক রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
আজহার আলী ১৯৭১ সালের মে থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বাগেরহাটের কচুয়া ও মোরেলগঞ্জ উপজেলায় সহযোগীদের সঙ্গে নিয়ে এসব মানবতাবিরোধী অপরাধ করেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে। ২০১৬ সালের ১৬ জুলাই এই যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল একটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ (বাংলাদেশ) মামলা (নম্বর-০৫/২০১৭) দায়ের করা হয়।
র্যাব-২ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. ফজলুল হক জানান, মানবতাবিরোধী পলাতক যুদ্ধাপরাধীকে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। গ্রেপ্তার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে যা যাচাই বাছাই করে ভবিষ্যতে র্যাব-২ এ ধরণের অভিযান অব্যাহত রাখবে। গ্রেপ্তার আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।