মরণোত্তর ‘আন্তর্জাতিক নির্বাচনী পুরস্কার’ পেলেন লুনা শামসুদ্দোহা

বাংলাদেশে ছবি এবং আঙুলের ছাপযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়ণসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরুপ দেশের তথ্য প্রযুক্তি খাতের অগ্রণী ব্যক্তিত্ব লুনা শামসুদ্দোহা মরণোত্তর আন্তর্জাতিক নির্বাচনী পুরস্কার ‘মেরিটোরিয়াস অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করেছেন। ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর পার্লামেন্টারি স্টাডিজ (আইসিপিএস) এবং পর্তুগিজ জাতীয় নির্বাচন কমিশন গত ১৫ নভেম্বর লিসবনে ২০২৩ সালের আন্তর্জাতিক নির্বাচনী পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে লুনা শামসুদ্দোহার একমাত্র মেয়ে রীম শামসুদ্দোহার হাতে ‌‌‘মেরিটোরিয়াস অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড-২০২৩’ তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে পর্তুগিজ জাতীয় নির্বাচন কমিশনের প্রেসিডেন্ট সোরেতো ডি ব্যারোসসহ বিভিন্ন দেশের নির্বাচন কমিশনের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা, ভারতের সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার নাসিম জাহিদী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যাক্তিত্ব লুনা শামসুদ্দোহা ২০২১ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। আইসিপিএস উল্লেখ করেছে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় অমূল্য অবদান রাখার জন্য লুনাকে এবার নির্বাচনী পুরস্কার ‘মেরিটোরিয়াস অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হলো। নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় তার অসাধারণ অবদান ভবিষ্যতের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক নির্বাচনী পুরষ্কার বৈশ্বিক নির্বাচনী ডোমেনে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং সংস্থাগুলোর জন্য প্রশংসনীয় সাফল্যের একটি উজ্জ্বল ফ্ল্যাটফরম হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর পার্লামেন্টারি স্টাডিজ (আইসিপিএস) এর প্রধান নির্বাহী ম্যাট গোখুলের নেতৃত্বে গঠিত বিচারক প্যানেল আন্তর্জাতিক নির্বাচনী পুরুস্কার, ২০২৩ বাছাইয়ের কাজ করেছেন। বিচারক প্যানেলে আরও ছিলেন-পর্তুগিজ জাতীয় নির্বাচন কমিশনের প্রেসিডেন্ট সোরেতো ডি ব্যারোস, ভারতের সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার নাসিম জাহিদী, মার্কিন নির্বাচন সহায়তা কমিশনের সদস্য টমাস হিকস, ইলেক্টোরাল সাইকোলজি অবজারভেটরির ডিরেক্টর মাইকেল ব্রুটার, মেক্সিকোর ফেডারেল জুডিশিয়ারির ইলেক্টোরাল ট্রাইব্যুনালের সাবেক ডিরেক্টর আলবার্তো গুয়েভারা, ইলেক্টোরাল ইন্টিগ্রিটি প্রজেক্টের ডিরেক্টর টবি জেমস, দক্ষিণ আফ্রিকার নির্বাচন কমিশনের চিফ ইলেক্টোরাল অফিসার জন হলিন্স, অন্টারিও’র সাবেক প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা সাই মামাবোলো, লিথুয়ানিয়ার কেন্দ্রিয় নির্বাচন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান লরা মাতজোসাইটে এবং সেন্টার ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেমস ডেভেলপমেন্ট, রিফর্মস অ্যান্ড ট্রেনিং অব জর্জিয়ার ডিরেক্টর নাটিয়া জালিশভিলি। লুনা শামসুদ্দোহার স্বামী ও দোহাটেক নিউ মিডিয়ার প্রেসিডেন্ট এ কে এম শামসুদ্দোহা বলেন, মরণোত্তর আন্তর্জাতিক নির্বাচনী পুরষ্কার অর্জণ অত্যন্ত গর্বের। কেননা বৈশ্বিক নির্বাচনী ডোমেনে এটি অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ জায়গা। তিনি এই পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য দোহাটেক নিউ মিডিয়ার সকল প্রকৌশলী এবং কর্মকর্তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের কথা স্মরণ করেন। উল্লেখ্য, লুনা শামসুদ্দোহা বাংলাদেশে ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের জন্য ছবি এবং আঙুলের ছাপযুক্ত ভোটার নিবন্ধনে ব্যবহৃত সফটওয়্যার উদ্ভাবনে যুক্ত ছিলেন। লুনার প্রযুক্তিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান দোহাটেক নিউ মিডিয়া এই সফটওয়্যার ডেভলপমন্ট এর ক্ষেত্রে পার্টনার ছিলো। মাল্টি-বায়োমেট্রিকসহ এই ভোটার নিবন্ধন সফটওয়্যার বিশ্বে প্রথম এবং বিভিন্ন দেশে এর ব্যবহার হচ্ছে।