ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে ৩০-৪০ জন রোগী। হাসপাতালে কলেরা স্যালাইন ও পর্যাপ্ত বেড না থাকায় শীতে মেঝেতে থেকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে রোগীদের।
এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রোগীর স্বজনরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও বলছে, বেডের অভাব ও কলেরা স্যালাইন সাপ্লাই না থাকায় কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা।
সরেজমিনে শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১১টায় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৯৬।
সারি সারি চট-চাদর বিছিয়ে মাটিতে শুয়ে আছে রোগী ও স্বজনরা। সেখানেই চিকিৎসা দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া আব্দুল্লাহ নামে এক শিশুর মা বলেন, গত দুদিন থেকে ছেলের পাতলা পায়খানা। আজ শুক্রবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি করেছি ছেলেকে। কিন্তু শীতের দিনে বেড না পেয়ে মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছি। হাসপাতাল থেকে কলেরা সেলাইন দিচ্ছে না।
মানিক মিয়া নামে আরও এক শিশুর বাবা বলেন, শুক্রবার সকালে ডায়রিয়া আক্রান্ত ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। কিন্তু বেড না থাকায় মেঝেতে কম্বল বিছিয়ে শুয়ে আছে আমার ছেলে ও স্ত্রী। চেষ্টা করেও শীতের তীব্রতা ও ঠান্ডা বাতাস থেকে রক্ষা পাচ্ছি না।
শহরের পৈরতলার এলাকার জহিরের ছেলে ভর্তি আছে হাসপাতালে। তিনি বলেন, রাতে হাসপাতালে ভর্তি করেছি ছেলেকে। কিন্তু বেড নাই। বারান্দাতেও কম্বল বিছিয়ে থাকতে হচ্ছে গাদাগাদি করে। এতে শিশুদের ডায়রিয়া ভালো করতে এসে ঠান্ডা লেগে যাচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শিশুদের জন্য ২০টি বেড মজুদ আছে। কিন্তু এবছর বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। আর ডায়রিয়া ওয়ার্ডে যে বেড রয়েছে, তা মোট ২০-২৫ জনকে দেওয়া সম্ভব। তাই রোগীদের মেঝেতেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ফাইজুর রহমান ফয়েজ বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার শীতে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেশি। তবে এবার বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা যাদের বয়স মাত্র ৬ মাস থেকে এক বছর। আগামী দু’একদিনের মধ্যে কলেরা স্যালাইন রোগীদের দিতে পারবো।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ একরাম উল্লাহ বলেন, শীতে প্রতিবছর শিশুদের ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগের প্রকোপ বাড়ে। এবারও বেড়েছে। তবে এবার শিশুর ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। হাসপাতালে পর্যাপ্ত খাবার স্যালাইনসহ অন্যান্য ওষুধ সরবরাহ আছে। সবাই চিকিৎসা পাচ্ছে।