বাদলের বাধরামীতে অর্পিত সম্পত্তিতে অবৈধ নামজারির অভিযোগ
*জাল কাগজে সরকারি জমি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে তোলপাড় শ্রীপুরের নালিয়াটেকী মৌজা*
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নালিয়াটেকী মৌজায় সরকারের অর্পিত ‘ক’ তফসিলভুক্ত সম্পত্তিতে জাল কাগজপত্রের মাধ্যমে অবৈধ নামজারির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় প্রভাবশালী দালালচক্রের সহযোগিতায় সরকারি জমি হাতিয়ে নেওয়ার এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায় নামজারির উদ্যোগ- অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নালিয়াটেকী মৌজার জোত নং ৫০০, ৪৪৪ ও ৪৪৩ সম্পর্কিত ৪৯২/২০১৩ নম্বর মামলা বর্তমানে গাজীপুর জেলা জজ আদালত ও অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন।
তবুও ২০১৮ সালের ৫ এপ্রিল শ্রীপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্তৃক স্মারক নং ৬৬১ অনুসারে একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে ভূমি সহকারী কর্মকর্তা ১০ মে ২০১৮ তারিখে স্মারক নং ১১২ মূলে নথিটি উপজেলা ভূমি অফিসে প্রেরণ করেন। সূত্রে জানা গেছে, উক্ত নথি এখনও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
জাল কাগজে নামজারির অভিযোগ, দালালের সংশ্লিষ্টতা-স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কোনো আদালতের রায় বা ডিক্রি ছাড়াই অর্জুন চন্দ্র দাস নামে এক ব্যক্তি জাল কাগজপত্র ব্যবহার করে স্থানীয় দালাল মোঃ বাদলের সহযোগিতায় নামজারির উদ্যোগ নেন। অথচ মূল রেকর্ড অনুযায়ী, জমিটি আবদুল বরকত, আহাদ বক্স, উপেন্দ্র চন্দ্র দাস ও মেঘু চন্দ্র দাস-এর নামে রেকর্ডভুক্ত ছিল।
ই-নামজারীর মাধ্যমে সরকারি জমি বেসরকারি মালিকানায়- তদন্তে আরও জানা গেছে, এস.এ ২৩ ও আর.এস ৩৮ নং দাগে ই-নামজারী আবেদন নং ৫৯৯৫৫৮৬ এবং ই-নামজারী নথি নং ৮৬৫৩/২২-২৩ এর মাধ্যমে জোত নং ৫০০-এর আওতায় মোঃ আলী হোসেন ও মুহাম্মদ শরিফ হোসেন-এর নামে প্রায় সাত শতাংশ সরকারি জমি অবৈধভাবে নামজারী করা হয়েছে।
তবে সরকারি রেকর্ড অনুযায়ী, উক্ত জমিটি ‘ক গেজেট ক্রমিক নং ৪৪৬, পৃষ্ঠা নং ১৬৯১৯’-এ অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে স্পষ্টভাবে সরকারি মালিকানাভুক্ত।
ভূমি অফিসের কিছু কর্মকর্তার নাম উঠে এসেছে- অভিযোগে শ্রীপুর ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক মনিরুজ্জামান মনির, সাবেক নায়েব মোঃ নূর এ আলম, দালাল বাদল ও কম্পিউটার অপারেটর নয়ন-এর নাম উঠে এসেছে। তারা কীভাবে এই জালিয়াতি প্রক্রিয়ায় জড়িত ছিলেন, তা তদন্তের মাধ্যমে উদঘাটনের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।
অভিযুক্ত বাদল মিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমার কাছে আদালতের রায়ের কপি ও ডিক্রি রয়েছে; সব কিছু আইনানুগভাবে করা হয়েছে।” প্রশাসনের অবস্থান- এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বলেন, “বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্তের ফলাফল পাওয়ার পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সহকারী কমিশনার (ভূমি)ও জানান, “তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রশাসনের নীরবতায় স্থানীয়দের ক্ষোভ- এদিকে প্রশাসনের আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য না পাওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সচেতন মহল ও জমির প্রকৃত মালিকদের পক্ষ থেকে অবৈধ নামজারী বাতিল এবং সংশ্লিষ্ট দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।