‘প্রধানমন্ত্রীকে গোনার টাইম নাই’—আ.লীগ নেতার অডিও ফাঁস

নোয়াখালীর সদর উপজেলার দাদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিনের একটি অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়েছে। এতে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার এলাকায় আমিই প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বললেও আমি শুনবো না। কাউকে গোনার টাইম নাই।’

রবিবার (১৩ আগস্ট) সকালে অডিও রেকর্ডটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইল হয়। অডিও রেকর্ডের ওই ব্যক্তি আওয়ামী লীগ নেতা জহির মেম্বার বলে স্থানীয়রা শনাক্ত করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১১ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন সাবেক ইউপি মেম্বার জহির উদ্দিন। তিনি বিভিন্ন দলের লোকজন নিয়ে এলাকায় নিজস্ব বাহিনী গড়ে তোলেন। এদের দিয়ে এলাকায় হামলা, দখল, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম করে আসছেন। জহির মেম্বার বাহিনীর সদস্য রাসেল ওরফে কালা সম্প্রতি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক নুরুল আমিনের সঙ্গে ছবি তুলে ফেসবুক পোস্ট করেন। এতে রাসেলকে ‘গুপ্তচর’ আখ্যা দিয়ে এলাকা ছাড়া করেন জহির মেম্বার। পরে রাসেল এলাকায় ফিরতে জহির মেম্বারকে ফোন দেন।

তখন জহির মেম্বার বলেন, ‘তোমার জন্য অনেকে ফোন দিয়েছে। আমি কারও কথা শুনি না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বললেও আমি শুনবো না। আমার এলাকায় আমিই প্রধানমন্ত্রী। কাউকে গোনার টাইম নাই। তবে তুমি নুরুল আমিনকে (বিএনপি নেতা) কোপাতে পারলে এলাকায় ফিরতে পারবা। আমি তোমার নিরাপত্তাসহ পুরস্কারও দেবো।’

ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক নুরুল আমিন বলেন, ‘আমি বর্তমানে সদর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি। বিএনপি করার কারণে জহির মেম্বার প্রায়ই আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছে। অডিও রেকর্ডটি শোনার পর থেকে আমি নিরাপত্তাহীনতায় আছি।’

এ ঘটনার পর থেকে কথোপকথনের অপর প্রান্তে থাকা রাসেল ওরফে কালা পলাতক। তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া গেছে। এজন্য অডিও রেকর্ডটির বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে কথোপকথনের বিষয়টি জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতা জহির উদ্দিন তা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘কথোপকথনের ব্যক্তি আমি নই। রাসেলকেও আমি চিনি না। আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা এডিট করে আমার কণ্ঠ বানিয়ে ছেড়ে দিয়েছে। আমি আইনি ব্যবস্থা নেবো।’

স্থানীয় দাদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান শিপন বলেন, ‘কথোপকথনের কণ্ঠ আওয়ামী লীগ নেতা জহির উদ্দিনের। সে আওয়ামী লীগের নাম বিক্রি করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। এ ঘটনার জন্য সেই রাসেলের বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছে।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান নাছের বলেন, ‘আমি অসুস্থ থাকায় বাসায় আছি। বিষয়টি মাত্র শুনলাম। প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে এমন কথা বলা জঘন্য অপরাধ। তদন্ত করে সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’