প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে নিয়ে আওয়ামীলীগের মিছিলে যোগদান

 

আন্দোলনের নামে বিএনপির নৈরাজ্যের প্রতিবাদে ময়মনসিংহের নান্দাইলে আওয়ামীলীগের মিছিলের সামনে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে নিয়ে এক ব্যক্তিকে দেখা গেছে। ব্যানার হাতে নারী কর্মীরা মিছিলের সামনের দিকে ছিলেন। তাঁদের অগ্রভাগে শর্টগান হাতে হাঁটছিলেন ওই ব্যক্তি।

রবিবার (১২ নভেম্বর) নান্দাইল উপজেলা আওয়ামী লীগ বেলা একটার দিকে ওই বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে। বিএনপির নৈরাজ্য ও আগুন সন্ত্রাসের প্রতিবাদে এ কর্মসূচি ঘোষণা করে। উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নেতা–কর্মীরা সদরে এসে কর্মসূচিতে অংশ নেন।

বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেওয়া কিছু কর্মীর হাতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন লেখাসংবলিত প্ল্যাকার্ড বহন করতে দেখা গেছে। একটি প্ল্যাকার্ডের লেখা ছিল, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় হলুদ সাংবাদিকের ঠাঁই নাই।’ অপর একটি প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘দালালি নয় সৎ পেশাদার সাংবাদিক চাই।’

দলীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে আগত হাজারো দলীয় নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা প্রথমে নান্দাইল সরকারি শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজ মাঠে জড়ো হন। পরে বেলা একটার দিকে কলেজ থেকে মিছিল করে নান্দাইল পুরান বাজার বাসস্ট্যান্ড সড়কে অবস্থিত দলীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে যোগ দেন।

আওয়ামী লীগের নারী কর্মীদের মিছিলের নেতৃত্ব দেন মেজর জেনারেল (অব.) আবদুস সালামের মেয়ে ওয়াহিদা হোসেন। এ সময় তাঁর পাশে জিন্সের প্যান্ট ও কেডস পড়া এক ব্যক্তিকে আগ্নেয়াস্ত্র বহন করতে দেখা গেছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো.আমিনুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, অস্ত্রধারী ওই ব্যক্তি দেহরক্ষী। তাঁর নাম মো. কামরুজ্জামান। তিনি বাগেরহাটের কুমারখালী গ্রামের বাসিন্দা। কামরুজ্জমান নান্দাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) আবদুস সালামের মেয়ে ওয়াহিদা হোসেনের স্বামী জাহিদ হাসানের দেহরক্ষী। অস্ত্রটি বৈধ। এটি লাইসেন্স করা বলে জানালেন এই আওয়ামী লীগ নেতা। অস্ত্রটি কারও দিকে তাক করা হয়নি। আকারে বড় থাকায় অস্ত্রটি গাড়িতে না রেখে দেহরক্ষী সেটি নিজের সঙ্গে বহন করছিলেন। তবে জনসমক্ষে এভাবে প্রদর্শন করা ঠিক হয়নি বলে জানান তিনি ।

আওয়ামী লীগের দলীয় নেতা–কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মিছিলে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে কামরুজ্জামানের ডানে জাহিদ হাসান ও তাঁর স্ত্রী ওয়াহিদা হোসেনকে দেখা গেছে।

নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাশেদুজ্জমান বলেন, ওই ব্যক্তি ও অস্ত্রের লাইসেন্স সম্পর্কে খোঁজ নিচ্ছে পুলিশ। বিষয়টি তাঁরা তদন্ত করে দেখছেন।

নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অরুন কৃষ্ণ পাল বলেন, প্রকাশ্যে অস্ত্র ব্যবহারের নীতিমালা আছে। কিন্তু প্রকাশ্যে এইভাবে আগ্নেয়াস্ত্র বহন করা ঠিক হয়নি। তবে একজনের লাইসেন্স করা অস্ত্র অন্যজন বহন করতে পারবে না। করলে বহনকারী ব্যক্তির রিটেইলার লাইসেন্স থাকতে হবে।