পানির নিচে বান্দরবান

বান্দরবানে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। বেড়েছে সাঙ্গু ও মাতামুহুরীর পানি। এতে করে প্লাবিত হয়েছে বান্দরবান শহরসহ আশপাশের জনপদ। বিভিন্ন হোটেল–রিসোর্টে আটকা পড়েছেন অনেক পর্যটক। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে রাঙামাটি ও চট্টগ্রামের সঙ্গে বান্দরবানের সড়ক যোগাযোগ।

জানা গেছে, বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় বান্দরবান সদর, রুমা, আলীকদমসহ জেলার বেশিরভাগ এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় যোগাযোগব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছে। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে টানা বৃষ্টিতে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে অনেকে সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছেন।

পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলায় দুই শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয়ের তাসলিমা সিদ্দিকা। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৪৬টি, লামায় ৫৫টি, নাইক্ষ্যংছড়িতে ৪৫টি, রুমায় ২১টি, রোয়াংছড়িতে ১৯টি, আলীকদমে ১৫টি, থানচিতে ৬টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

স্থানীয়রা বলে, জেলার প্রধান দুটি পাহাড়ি নদী সাঙ্গু ও মাতামুহুরীর নাব্য কমে যাওয়া এবং নদীতীরবর্তী এলাকা ঘিরে গড়ে ওঠা প্রধান শহর, উপজেলা শহর এবং জনবসতিপূর্ণ গ্রামগুলো অল্প বৃষ্টিতেই পানিতে তলিয়ে যায়। জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে দুর্ভোগের শিকার হতে হয়।

সোশাল মিডিয়ায় আসা ছবিতে দেখা গেছে, জেলা শহরের অনেক ভবনের প্রায় এক তলা পানিতে ডুবে আছে। পুলিশ সুপারের বাসভবনের সামনে হাঁটু পানি।

বান্দরবান পৌরসভার কালাঘাটা গোধার পাড় এলাকায় সোমবার দুপুরে পাহাড় ধসে মা-মেয়ের মৃত্যুর খবর শোনা গেলেও যোগাযোগ বিপর্যস্ত থাকায় স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে এর সত্যতা যাচাই করা যায়নি।

লামার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোস্তফা জাবেদ কায়সার বলেন, টানা বৃষ্টিতে সময় যত গড়াচ্ছে, পরিস্থিতি ততই খারাপ হচ্ছে। লামায় এরই মধ্যে ৫৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৬০০ থেকে ৭০০ মানুষকে নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু নিচু এলাকায় স্রোতের কারণে মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসার কাজ ব্যাহত হচ্ছে।

তিনি বলেন, আলীকদম-লামা হয়ে কক্সবাজারের চকরিয়া পর্যন্ত সড়কে বিভিন্ন জায়গায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। ফলে ওইসব এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এদিকে চট্টগ্রাম ও বান্দরবানে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। ফলে অনেক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় এ দুই জেলায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

এমএইচএফ