পবিত্র কোরআনের নির্দেশনা : কেয়ামতের দিনের ঘটনাবলী

পবিত্র কোরআনের ৮৯ তম সূরা ফাজর মক্কায় অবতীর্ণ এবং সুরাটির আয়াত সংখ্যা ৩০টি। সুরার শুরুতে মহান আল্লাহ প্রাচীনকালের ধ্বংস হওয়া কয়েকটি নাফরমান ও কাফির কয়েকটি জাতির উল্লেখ করেছেন। সুরাটিতে আল্লাহ বলেছেন, সম্পদশালী হওয়া বা না হওয়াকে মানুষ সম্মান-অসম্মানের মানদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করে , যা পুরোপুরি ভুল । এরপর মহান আল্লাহ এতিমদের প্রতি দয়া করা ও দরিদ্রদের দান করার নির্দেশ দিয়েছেন। মিরাসের সম্পদ সুষ্ঠু ও সঠিকভাবে বণ্টন করার নির্দেশ দিয়েছেন। এই সুরার শেষ দশ আয়াতে আল্লাহ কেয়ামতের বর্ণনা দিয়ে বলেছেন, সেদিন জাহান্নাম সবার সামনে আনা হবে এবং অবিশ্বাসী, কাফের ও অপরাধীরা নিজেদের ভুল বুঝতে পারবে কিন্তু তাদের এই উপলব্ধি কোনো কাজে আসবে না। আর দুনিয়াতে যারা অবিচল ইমানের অধিকারী ছিলো, তারা আল্লাহর সন্তুষ্টি ও জান্নাত লাভ করবে।

সুরা ফাজরের শেষ দশ আয়াতে আল্লাহ বলেন,

(২১)
کَلَّاۤ اِذَا دُکَّتِ الۡاَرۡضُ دَکًّا دَکًّا

কাল্লা ইযা-দুক্কাতিল আরদু দাক্কান-দাক্কা।
পৃথিবীকে যখন চূর্ণ-বিচূর্ণ করা হবে,

(২২)
وَّجَآءَ رَبُّکَ وَالۡمَلَکُ صَفًّا صَفًّا
ওয়া জাআ রাব্বুকা ওয়াল মালাকু সাফফান-সাফফা।
এবং যখন তোমার রব হাজির হবেন ও সারিবদ্ধভাবে ফেরেশতাগণও,

(২৩)
وَجِایۡٓءَ یَوۡمَئِذٍۭ بِجَہَنَّمَ ۬ۙ  یَوۡمَئِذٍ یَّتَذَکَّرُ الۡاِنۡسَانُ وَاَنّٰی لَہُ الذِّکۡرٰی

ওয়া জীআ ইয়াওমাইযিম-বিজাহান্নামা ইয়াওমাইযিইঁ ইয়াতাযাক্কারুল ইনসানুওয়া আন্না লাহুয-যিকরা।
সেদিন জাহান্নামকে সবার সামনে আনা হবে এবং সেদিন মানুষ উপলব্ধি করবে, তখন এই উপলব্ধি তার কী কাজে আসবে?

 

(২৪)
یَقُوۡلُ یٰلَیۡتَنِیۡ قَدَّمۡتُ لِحَیَاتِیۡ

ইয়াকূলু ইয়ালাইতানী কাদ্দামতু লিহায়াতী।
সে বলবে, হায়! আমার এ জীবনের জন্যে আমি যদি কিছু অগ্রিম পাঠাতাম!

(২৫)
فَیَوۡمَئِذٍ لَّا یُعَذِّبُ عَذَابَہٗۤ اَحَدٌ

ফাইয়াওমাইযিল-লা ইউআযযিবু আযাবাহূ আহাদ।
সেই দিন তার শাস্তির মত শাস্তি কেউ দিতে পারবে না।
(২৬)
وَّلَا یُوۡثِقُ وَثَاقَہٗۤ اَحَدٌ
ওয়ালা ইঊসিকু ওয়াসাকাহূ আহাদ।
এবং তার বাঁধার মতো কেউ বাঁধতে পারবে না।

(২৭)
یٰۤاَیَّتُہَا النَّفۡسُ الۡمُطۡمَئِنَّۃُ

ইয়া আইয়াতুহা-ন্নাফসুল মুতমাইন্নাহ
হে প্রশান্ত অন্তর!

(২৮)
ارۡجِعِیۡۤ اِلٰی رَبِّکِ رَاضِیَۃً مَّرۡضِیَّۃً

ইরজিঈ ইলা রাব্বিকি রাদিয়াতাম মারদিইয়াহ।

তুমি তোমার রবের কাছে ফিরে এসো সন্তুষ্ট ও সন্তোষভাজন হয়ে,

(২৯)

فَادۡخُلِیۡ فِیۡ عِبٰدِیۡ

ফাদখুলী ফী ইবাদী।
আমার বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হও,

(৩০)

وَادۡخُلِیۡ جَنَّتِیۡ
ওয়াদখুলী জান্নাতী।
আর আমার জান্নাতে প্রবেশ করো।

সূরা ফাজরের উপরোক্ত আয়াতগুলো থেকে আমরা যা শিখতে পারি তা হলো-
১. কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তার ফেরেশতাদের নিয়ে আমাদের সবার সামনে উপস্থিত হবেন। ।তিনি সেদিন আমাদের ভালো-মন্দ সকল কৃতকর্মের হিসাব নিবেন। আল্লাহর সামনে জবাবদিহির ভয়ে যে কোনো পাপ কাজ করতে আমাদের বিরত থাকা উচিত।

২. আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য সকল ধরণের ভালো কাজ করতে হবে , দৃঢ় ইমানের অধিকারী হতে হবে, ইমানের পথে অটল ও অবিচল থাকতে হবে । কেয়ামতের দিন সবাই তাদের খারাপ কৃতকর্মের জন্য আফসোস করবে ,কিন্তু এতে কোনো কাজ হবে না ।