ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার আচারগাঁও ফাযিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. আব্দুল হাই এর বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ, জালিয়াতি, জমি বিক্রি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ এনে সাংবাদিক সম্মেলন ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৫ অক্টোবর) বেলা ১১টায় আচারগাঁও জলসিড়ি বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে অংশ নেন মাদ্রাসার গভর্নিংবডির সদস্য, শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও এলাকাবাসী।
লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, অধ্যক্ষ আব্দুল হাই চাকরির শুরু থেকেই নানা জালিয়াতি প্রতারণার মাধ্যমে পদোন্নতি ও আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন। প্রথম কর্মস্থল নিভিয়াঘাটা ফাযিল মাদ্রাসায় জাল সনদ ব্যবহার করে চাকরি নেন তিনি। পরে অনিয়ম প্রকাশ পেলে পদত্যাগ করে আচারগাঁও দাখিল মাদ্রাসায় যোগ দেন। পরবর্তীতে কামিল ৩য় বিভাগ থাকা সত্ত্বেও ২য় বিভাগ দেখিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে সুপার পদে নিয়োগ পান।
অভিযোগে আরও বলা হয়, ১৯৯৫ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সহকারী মৌলভী পদে বেতনভাতা নিলেও তিনি একই সময়ে আরবি প্রভাষক ও সুপারের বেতনও উত্তোলন করেছেন, যা সরকারি অর্থ আত্মসাতের শামিল। তিনি আত্মীয়-স্বজনদের অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়েছেন এবং শিক্ষকদের টিউশন ফি সহ সরকারি বরাদ্দ আত্মসাৎ করেছেন। করোনাকালে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও প্রায় ২০ লাখ টাকার ভুয়া ব্যয় দেখানো হয়।
এছাড়া, অভিযোগ ওঠে অধ্যক্ষ আব্দুল হাই মাদ্রাসার প্রায় ১০ শতাংশ জমি অনুমোদন ছাড়া বিক্রি করেছেন এবং আরও ৪০ শতাংশ জমি বন্ধক দিয়েছেন। এভাবে তিনি প্রতিষ্ঠানটির কোটি টাকার সম্পদ আত্মসাৎ করে ব্যক্তিগত সম্পদ গড়ে তুলেছেন। বক্তারা বলেন, “প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাৎ করে তিনি নান্দাইল পৌর এলাকায় বহুতল ভবন নির্মাণ করেছেন। তাঁর নামে-বেনামে কোটি টাকার সম্পত্তি গড়ে উঠেছে।”
অভিভাবক ও এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, তার মেয়েদেরও অনিয়মের মাধ্যমে চাকরি দিয়েছেন এবং অন্যদের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেছেন। এমনকি সাবেক সভাপতির মৃত্যুর পর তাঁর স্বাক্ষর জাল করে ব্যাংক থেকে অর্থ উত্তোলনের অভিযোগও রয়েছে। বক্তারা দ্রুত তদন্তপূর্বক অধ্যক্ষ মো. আব্দুল হাইকে চাকরি থেকে অব্যাহতি প্রদান, আত্মসাৎকৃত অর্থ ফেরত ও তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। তারা বলেন, “সরকারি ও বেসরকারি তদারকি সংস্থা যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়, তবে এ ধরনের দুর্নীতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভয়াবহ দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়াবে।” এ সময় বক্তারা সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন এবং বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।