সম্প্রতি অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা, লেবাননে হামলা, হিজবুল্লাহ এবং ফিলিস্তিনি গ্রুপ হামাসের প্রধান কর্মকর্তাদের হত্যার প্রতিক্রিয়া স্বরূপ ইসরাইলে দুশো ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। এমন হামলার পর ইরানে পাল্টা হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইসরাইল।
মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বার্তা দিয়ে ইরান বলেছে, নতুন করে ইসরাইলি হামলা হলে এর ‘অপ্রথাগত জবাব’ দেবে ইরান। যেখানে ইসরাইলের অবকাঠামো লক্ষ্য করা হামলা চালানো হতে পারে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এমনটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একজন ইরানি কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার বলেছেন, ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক উত্তেজনা মোকাবেলায় কাতারের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে একটি বার্তা পাঠিয়েছে ইরান। বার্তায়, তেহরান ওয়াশিংটনকে বলেছে ‘একতরফা আত্মসংযম দেখানোর পর্যায় শেষ হয়েছে। কেননা, ব্যক্তিগত আত্মসংযম আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা প্রয়োজনীয়তাগুলিকে সুরক্ষিত করে না।’ এমন হুশিয়ারি দেওয়ার পর আবার এটাও বলা হয়েছে, ইরান কোনো আঞ্চলিক যুদ্ধ চায় না।
এদিকে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর ইসরাইলকে সমর্থন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যেখানে বলা হয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাব দেওয়ার অধিকার রয়েছে ইসরাইলের।
ইরানের এই হামলা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্য নিয়ে ওয়াশিংটন থেকে আল জাজিরার কিম্বার্লি হ্যালকেট ব্যাখ্যা করে বলেছেন, ‘এর অর্থ হতে পারে, আমরা চাই না আপনি কিছু করুন, আমরা এটিকে আটকানোর চেষ্টা করছি। বা এটি একটি সতর্কতা হতে পারে; ‘আপনি পদক্ষেপ নিন এবং আমাদের প্রতিক্রিয়া আরও বড় হতে চলেছে।’
ইসরাইলের ওপর ইরানের এই হামলা নিয়ে লেখক ও বিশেষজ্ঞ তোহিদ আসাদি বলেছেন, ইরান পুরো পশ্চিম এশিয়াকে একটি পূর্ণাঙ্গ, সর্বাত্মক যুদ্ধের দিকে টেনে নিয়ে যেতে আগ্রহী ছিল না, কিন্তু ইসরাইল গত কয়েক মাস ধরে তাদের পরীক্ষা নিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে আমরা ইরানি কর্মকর্তাদের এক ধরণের দ্বিমুখী বক্তব্য দেখছি এবং শুনছি। একদিকে, তারা দাবি করে যে তারা যুদ্ধে আগ্রহী নয় … একই সাথে, তারা বলছে তারা যুদ্ধকে ভয় পায় না। এই মন্তব্যগুলি ইঙ্গিত করে যে আরও আগ্রাসনের ক্ষেত্রে কঠিন পরিণতি হবে। এখন তেহরান স্পষ্টভাবে বলছে, তারা আর ধৈর্য ধরবে না কারণ ধৈর্যের সীমা রয়েছে।’
এদিকে সামরিক বিশ্লেষক এলিজাহ ম্যাগনিয়ার মতে, ‘ইরানের দুটি বিকল্প ছিল; হয় তার সমস্ত মিত্রদের পরাজিত না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা এবং তারপরে ইসরাইল যখন তাদের আক্রমণ করবে তখন লড়াইয়ে নামা, অথবা এখনই যুদ্ধে যোগ দেওয়া।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইরান কোনো ইসরাইলি হামলা সহ্য করবে না, এমনকি সামরিক স্থাপনা বা নিরাপত্তা সুবিধার বিরুদ্ধেও নয়। কারণ ইরান… মনে করে তারা এখন সমান… ইসরাইল দুইবার আঘাত করেছে, ইরানও তাদের দুইবার আঘাত করেছে।’