চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন নিয়ে অনিশ্চয়তা

চতুর্থ দফায় স্থগিত

চতুর্থ বারের মতো স্থগিত করা হয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন। আগামী ৩১ জুলাই নগরীর কিং অব চিটাগাং কনভেনশন হলে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

আগামী ৩০ জুলাই চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনের কারণে কেন্দ্র থেকে মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানার সম্মেলনও স্থগিত করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার নগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

গত ২৭ জুন নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট হলে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সম্মেলনের এই তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। সভায় নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরীকে চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনকে সদস্য সচিব করে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটিও গঠন করা হয়েছিল।

দলীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, নগর আওয়ামী লীগের একপক্ষের আপত্তির কারণে দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলন স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছেন।
এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার নগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘সম্মেলন করতে হলে সবার সহযোগিতা লাগবে। কেউ যদি বিরোধিতা করে তাহলে সম্মেলন করতে পারবো না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান মাহমুদ হাসনী দেশ বর্তমানকে বলেন, ‘আমরা মনে করছি, সংগঠনের একটি পক্ষের নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে ভুল তথ্য দিয়ে সম্মেলন স্থগিত করিয়েছেন। চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনের পর সম্মেলন হলে কী এমন অসুবিধা হতো? এখন আমরা দেখবো, মহানগর কমিটির কতজন মেম্বার নির্বাচনী প্রচারণায় উপস্থিত থাকেন।’

চতুর্থ দফায় স্থগিত হয়ে যাওয়ায় আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। নগর আওয়ামী লীগ নেতারাও বলতে পারছেন না, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে সম্মেলন হবে কিনা।

দলীয় সূত্রগুলো বলছে, নির্বাচনের আগে সম্মেলন হওয়ার আর কোনো সুযোগ নেই। কারণ শোকের মাস আগস্টের পর আওয়ামী লীগের নির্বাচনী তৎপরতা শুরু হবে। অন্যদিকে বিরোধী দলের আন্দোলন কর্মসূচি মোকাবিলায়ও রাজপথে আওয়ামী লীগকে ব্যস্ত থাকতে হবে। এ অবস্থায় আগামী নির্বাচনের আগে সম্মেলন আয়োজনের কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না নগর আওয়ামী লীগ নেতারা।

এর আগে তিন দফা নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। গত ১ অক্টোবর, ৪ ডিসেম্বর ও ১৮ ডিসেম্বর সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনবারই কেন্দ্রের নির্দেশে সম্মেলনের তারিখ স্থগিত করা হয়।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০০৬ সালের ২৭ জুন নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে। ওই সম্মেলনে এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে সভাপতি এবং কাজী এনামুল হক দানুকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়েছিল। ২০১৩ সালের ২২ সেপ্টেম্বর কাজী ইনামুল হক দানু মারা যান। এরপর ওই বছরের ১৪ নভেম্বর কেন্দ্র থেকে ৭১ সদস্যের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে মহিউদ্দিন চৌধুরীকে সভাপতি এবং আ জ ম নাছির উদ্দীনকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

২০১৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর মহিউদ্দিন চৌধুরী মারা গেলে ১০ দিন পর সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীকে কেন্দ্র থেকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। গত ৬ বছর ধরে তিনি আ জ ম নাছিরের সঙ্গে নগর আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।

এমএইচএফ