রাত পোহালেই খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। নিরাপত্তা নিশ্চিতে নগরজুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দেখা মিলছে। দুই হাজার সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। বিজিবি, র্যাব ও পুলিশের সমন্বয়ে কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে রয়েছে খুলনা নগরী।
নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নগরীতে টহল দিচ্ছে বিজিবির ১১ প্লাটুন সদস্য। নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্র ও নগরীর নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করবেন পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ৮ হাজার ৩০০ জন সদস্য। নির্বাচনী মাঠে থাকবেন ৪৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং ১০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।
ভোটকেন্দ্রগুলোতে স্থাপন করা হয়েছে ২ হাজার ৩০০টি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। ইভিএম মেশিন প্রয়োজন হচ্ছে প্রায় ৩ হাজার। পর্যবেক্ষক থাকবেন বেসরকারি দুটি সংস্থার ২০ জন ও নির্বাচন কমিশনের ১০ জন।
কেসিসি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আলাউদ্দিন জানান, সিটি নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে খুলনা বিভাগীয় ক্রীড়া কমপ্লেক্স থেকে কেন্দ্রেগুলোতে সরঞ্জাম পাঠানো কার্যক্রম চলছে।
তিনি আরও জানান, সোমবার (১২ জুন) সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হবে জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে। এছাড়া এক হাজার ৭৩২টি ভোটকক্ষের প্রতিটিতে একটি করে ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান ভূঁঞা বলেন, প্রতি কেন্দ্রে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে ১৭ জন পুলিশ ও আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে। প্রতি ৩ কেন্দ্রের জন্য একটি করে মোবাইল টিম কাজ করবে। ২০টি মোটরসাইকেল থাকবে। ২টি মোটরসাইকেলে ৪ জন করে ক্রস পেট্রোল করবে। স্ট্যান্ড বাই পার্টি থাকবে ২০টি। প্রতি টিমে ৩৫ জন পুলিশ ও ২০ জন ব্যাটেলিয়ন সদস্য নিয়ে ৫টি রিজার্ভ টিম থাকবে।
এদিকে, শনিবার মধ্যরাতে নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা শেষ হয়েছে। প্রার্থীরা শেষ সময়ে বিরামহীন প্রচার চালিয়েছেন। নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে নগরবাসীর দ্বারে দ্বারে ছুটে ভোট প্রার্থনা করেছেন তারা। পথসভা, কর্মীসভা ও গণসংযোগসহ নানা উপায়ে ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণে ব্যস্ত সময় পার করেছেন তারা।
কেসিসি নির্বাচনের মেয়র পদে পাঁচজন প্রার্থী হয়েছেন। তারা হলেন, আওয়ামী লীগের তালুকদার আব্দুল খালেক (নৌকা), জাপার শফিকুল ইসলাম মধু (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. আবদুল আউয়াল (হাতপাখা), স্বতন্ত্রপ্রার্থী এসএম শফিকুর রহমান মুশফিক (দেয়াল ঘড়ি) ও জাকের পার্টির এস এম সাব্বির হোসেন (গোলাপ ফুল) প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।
এছাড়া সাধারণ ৩১টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ১৩৬ জন এবং ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৩৯ জন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে নগরীর ১৩নং ওয়ার্ডে এস এম খুরশিদ আহমেদ টোনা এবং ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে জেড এ মাহমুদ ডন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
উল্লেখ, কেসিসিতে এ বছর ভোটার ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন। নগরীর ৩১টি ওয়ার্ডের ২৮৯টি ভোটকেন্দ্রে তারা ভোট প্রদান করবেন।ভোট গ্রহণ কার্যক্রম সহজ করতে এসব কেন্দ্রে এক হাজার ৭৩২টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে।
এমএফ