চাকরির বয়স শেষ হওয়ায় ফেসবুকে লাইভে এসে নিজের সব একাডেমিক সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলা সেই মুক্তার চাকরি হলো আইসিটি মন্ত্রণালয়ে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইডেন কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী মুক্তা সুলতানার সার্টিফিকেট পোড়ানোর ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ডেকে পাঠান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।
সেশনজট ও করোনার কারণে একদিকে চাকরির আবেদনের সময় শেষ। অন্যদিকে পরিবারের খরচ বহন করতে খেতে হচ্ছে হিমশিম। আবার চাকরির বয়স বাড়ানোর আন্দোলন করেও মিলছে না কোনো সুখবর। তাই ক্ষোভে নিজের সব সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলেন মুক্তা। কষ্ট আর ক্ষোভের এ কথা শুনে মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্পে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক তার চাকরির ব্যবস্থা করে দেন।
সোমবার (২৯ মে) আগারগাঁওয়ে মুক্তা সুলতানার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন তিনি। এসময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপাতত ছয়মাসের জন্য মুক্তা সুলতানার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে। স্থায়ীর বিষয় বলব না তবে বিশ্বাস করি সে ছয় মাসের আগেই নিজের একটা জায়গা তৈরি করে ফেলতে পারবেন।
চাকরি পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলককে ধন্যবাদ জানান কিশোরগঞ্জের মেয়ে মুক্তা।
গত মঙ্গলবার ইডেন কলেজের সামনে এসে ফেসবুকে লাইভে থেকে নিজের সব একাডেমিক সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলেন ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী মুক্তা সুলতানা। চাকরির বয়স শেষ হওয়ায় এ শিক্ষার্থীর সার্টিফিকেট সরকারি-বেসরকারি কোনো চাকরিতে কাজে লাগছে না দাবি করে পুড়িয়ে দেন তিনি।
লাইভের ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি তার মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের সার্টিফিকেট পোড়াচ্ছেন। এর আগে তিনি দেখান, তার স্নাতক পরীক্ষা ২০১৩ সালে এবং স্নাতকোত্তর পরীক্ষা ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৫ সালে তার পরীক্ষা হলেও ২০১৯ সালে তার সার্টিফিকেট ইস্যু হয়।
২০১৫ সালে পরীক্ষা দিয়েও তিনি ২০১৯ সাল পর্যন্ত ৪ বছর কোথাও আবেদন করতে পারেননি।এদিকে চাকরির বয়সসীমা অনুযায়ী তার আবেদনের সময়ের চার বছর কাজে লাগাতে পারেননি।
ক্ষোভ প্রকাশ করে মুক্তা বলেন, যে সার্টিফিকেট দিয়ে সরকারি চাকরিতে আবেদন করা যায় না, বেসরকারি চাকরিতেও আবেদন করা যায় না, সে সার্টিফিকেট রেখে কি লাভ? পোকামাকড়ে খাওয়ার চেয়ে ছাই বানানো অনেক ভালো।
তিনি আরও বলেন, দক্ষিণ এশিয়াসহ পৃথিবীর কোথাও এই বয়সসীমা নেই। শুধু বাংলাদেশ আর পাকিস্তানে এ অবস্থা। ২৭ বছর পড়াশোনা করে যদি আবেদনই না করতে পারি, তা হলে পড়াশোনা করে লাভ কী?
এর আগে সরকারি চাকরির আবেদনের বয়সসীমা ৩০-৩৫ করার জন্য আন্দোলন করে আসছিলেন মুক্তা।
এদিকে চাকরিতে প্রবেশে বয়স বাড়ানোর পাশাপাশি মুক্তার কথাগুলো তুলে ধরে যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রতিমন্ত্রী পৌঁছে দিয়েছেন বলে জানান মুক্তা সুলতানা।