আশুরায় সিদ্ধিরগঞ্জে তাজিয়া মিছিল

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : পবিত্র আশুরা উপলক্ষে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীতে হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে শিয়া সম্প্রদায়ের তাজিয়া মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (১৭ জুলাই) বিকাল ৪টার দিকে আদমজী বিহারী ক্যাম্প থেকে মিছিলটি শুরু হয়। পরে নতুন বাজার নাগিনা জোহা রোড হয়ে বার্মাশীল নারায়ণগঞ্জ-আদমজী-চিটাগাং রোড সড়কের এসওরোড মুনলাইট হয়ে আদমজী কবরস্থান পরে পুনরায় বিহারী ক্যাম্পে গিয়ে মিছিলটি শেষ হয়।

এসময় তরুণরা বুক চাপড়ে, ঢোল, বাদ্য বাজিয়ে মাতম করে। শিশুরা রিকশাভ্যানে চড়ে তাজিয়া মিছিলে অংশ নিয়েছে। পৃথক রিকশাভ্যান থেকে তীব্র গরমে তৃষ্ণার্তদের পানি, শরবত বিতরণ করা হয়।

মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা অনেকে হাতে লাল পতাকা এবং মাথায় কালো কাপড় বেঁধে শোক প্রকাশ করে মিছিলে অংশ নেন। তাজিয়া তৈরি করা হয়েছে ইমাম হোসেনের সমাধির আদলে। মিছিলে একদল রয়েছে যারা শোকের গান গাইতেছিলেন। এছাড়া অনেকেই বুক চাপড়ে ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ বলে মাতম করেন। এক দল যুবকের মধ্যে তলোয়ার খেলা, মুখে কেরোসিন নিয়ে আগুনের ফুলকি ছুড়ে মারার বিষয়টি উৎসুক মানুষের দৃষ্টি কাড়ে।

এদিকে শিয়া সম্প্রদায়ের এ মিছিলকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ। ব্যাপক পুলিশের উপস্থিতিতে মিছিলের সামনে ও পেছনে পুলিশি পাহারায় মিছিলটি শুরু ও শেষ হয়।

এসময় শত শত উৎসুক মানুষ সড়কের দুই পাশে দাঁড়িয়ে, ভবনের ছাদে, বাড়ির বারান্দায় দাঁড়িয়ে তাজিয়া মিছিল দেখে। এমনকি কেউ কেউ মিছিলের সাথে সাথে অনেকটা পথ পায়ে হেঁটেছেন। তাজিয়া দেখতে অভিভাবকদের সাথে কোমলমতি শিশুদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো।

লিয়াকত আলী চেয়ারম্যানের সার্বিক দিক নির্দেশনায় এসময় তাজিয়া মিছিলটিতে নেতৃত্ব দেন আয়োজক কমিটির সহ-সভাপতি লালবাবু, মো: কাল্লু, মো: মেহেদী হাসান, মো: ফকিরা, মো: আলী সাধারণ সম্পাদক মো: শামীম, মো: নাথিয়া মুন্না, ভোলা মেম্বার, মুন্না মেম্বার, শাহজাদা, মৌলভী মুন্না, শাহজাদা, মো: তাসলিম, মো: মনসুর প্রমুখ।

এসময় তারা জানান, প্রায় ৭০ বছর ধরে এ সুন্নি তাজিয়া মিছিল বের হচ্ছে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে হজরত ইমাম হোসেনের (রা.) ত্যাগের কথা, তাঁর শিক্ষা বিশ্ববাসীকে জানানো। অন্যায়ের কাছে তিনি মাথা নত করেননি।

উল্লেখ্য, আশুরা মুসলিম বিশ্বে ত্যাগ ও শোকের একটি দিন। হিজরি সাল অনুসারে ১০ মহররম কারবালায় হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র ইমাম হোসেনের মৃত্যুর দিনটি সারা বিশ্বে মুসলমানরা পালন করেন।