গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, আদালত তাৎক্ষণিকভাবে মামলা-বিচার শেষ করতে চাচ্ছে। এ রকম একটা মনোভাব আসছে। এটা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছি। কিছু একটার শিকার তো হচ্ছি বটে। এটা পরিস্কার। এটা প্রতিহিংসা বলেন, হিংসা বলেন, বিদ্বেষ বলেন। বিচার পাচ্ছি না।
সোমবার (১৫ জুলাই) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলমের আদালতে তিনি
অর্থ আত্মসাতের মামলায় হাজিরা দিতে আসেন। হাজিরা শেষে আদালত চত্ত্বরে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, ভালো লাগলো আজকে আমাকে খাঁচার মধ্যে ঢোকায়নি। খাঁচার বিষয়টা আমি বারে বারে বলতে থাকবো। এটা জাতির প্রতি একটা মস্ত বড় অপমান। এ অপমান আমাদের সহ্য করা উচিত না। বিচার বিভাগের প্রতি আবেদন জানাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খাঁচাগুলো সরিয়ে ফেলেন। এটার ব্যবহার থেকে আমরা মুক্তি পেতে চাই। এটা সবাইকে জানিয়ে গেলাম। আপনারাও বারে বারে লেখেন, যেন এটা হয়। এটা মানবতার প্রতি অপমান। কেন মানুষকে পশুর মত খাঁচায় ভরে রাখবে। এটা কোনো বিষয় হলো না। বিচারের বিষয় না, কিছু না। এটা অপমান করার বিষয়। সারা জাতিকে অপমান করার বিষয়। জাতি অপমান থেকে মুক্ত হতে চায়।
তিনি বলেন, এটা আমার বিষয়ে বলছি না। খাঁচাটাই বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া উচিত। এটা কারো ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না। এটা আদালতে রাখা মানে আমি তোমাকে অপমান করার জন্য এখানে বসছি। সেজন্য তো এসছে, বিচারের জন্য এসছে, অপমান করার জন্য তো নয়।
এরআগে এদিন বেলা ১১ টার দিকে ডা. ইউনূসসহ অন্যান্য আসামিরা আদালতে হাজির হন। মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ছিলো। কিন্তু এ মামলায় চার্জগঠনের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হয়েছে। যা শুনানির জন্য রয়েছে জানিয়ে সাক্ষ্য পেছানোর আবেদন করেন। আদালত সময় আবেদন মঞ্জুর করে ২৩ জুলাই তারিখ ধার্য করেন।
সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য সংক্ষিপ্ত সময় হওয়ায় এতে তীব্র আপত্তি জানান ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি লম্বা তারিখ ধার্যের আবেদন করেন। এতে আপত্তি জানান, দুদক প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল।
ড. ইউনূসের আইনজীবী আদালতকে বলেন, আপনার আদালতে আমরা ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কিত। অন্যান্য মামলায় লম্বা ডেট দিলেও এটা কেন শর্ট ডেট হবে। তখন বিচারক বলেন, আমার আদালতে একটা মামলার ডেট দুইদিন পরও পড়েছে। আর তার বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক বিচারের অভিযোগ আগে কখনো কেউ করেনি।
পরে আদালত আগামী ৫ আগস্ট সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন।