অবশেষে পদত্যাগ করেছেন রাজধানীর মতিঝিলে অবস্থিত আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সমালোচিত সেই দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদ ।
শনিবার (২৬ আগস্ট) খন্দকার মুশতাক জানান, বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) গভর্নিং বডির সভাপতি বরাবর পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছি।
পদত্যাগের কারণ ‘ব্যক্তিগত’ দাবি করলেও `ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বিদায় নিতে হয়েছে’ বলে পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করেছেন মুশতাক।
পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করে খন্দকার মুশতাক বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগত কারণে দাতা সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেছি। এখন থেকে এ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। ’
গভর্নিং বডির সভাপতি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাকের ‘পদত্যাগপত্র’ পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, পরবর্তী বৈঠকে খন্দকার মুশতাক আহমেদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ ও এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৫ মার্চ সিনথিয়া ইসলাম নামের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিয়ে করেন মুশতাক আহমেদ। তবে এই ঘটনা জানাজানি হয় গত জুনের শুরুতে। কিন্তু, সিনথিয়ার পরিবার তা মেনে নিতে পারেনি। সিনথিয়ার বাবা সাইফুল ইসলাম অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে গত ২২ জুন ঠাকুরগাঁও ও ১ আগস্ট ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন।
১ আগস্ট কলেজছাত্রীকে প্রলোভন ও ধর্ষণের অভিযোগে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দাতাসদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদকে প্রধান আসামি করে মামলা করা হয়। মামলার অন্য আসামি হলেন ওই কলেজের অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদী।
১৭ আগস্ট মুশতাক আহমেদকে বিয়ে করা আইডিয়ালের ছাত্রীকে নিরাপদ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে অভিযুক্ত মুশতাককে আগাম জামিন দেন আদালত। বিচারপতি শেখ জাকির হোসেন ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ সেদিন এ আদেশ দেন।
ওই দিন আদালত বলেন, আইডিয়ালের ছাত্রীর বয়স নিয়ে আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষ পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। তাই ভিকটিমের বয়স নির্ধারণ করা জরুরি। বয়স নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত ভিকটিম নারী ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে সেফহোমে (নিরাপদ হেফাজতে) থাকবে।
এরপর ২০ আগস্ট আপিল বিভাগ মুশতাকের জামিন বহাল রেখে বলেছিলেন, মুশতাক গভর্নিং বডির কোনো কর্মকাণ্ডে বা মিটিংয়ে অংশ নিতে পারবেন না। তিনি স্কুলের সীমানায়ও যেতে পারবেন না।