সহকর্মীকে গুলি করে হত্যা করা কনস্টেবল ‘মানসিক রোগে’ আক্রান্ত, দাবি পরিবারের

রাজধানীর কূটনৈতিক এলাকার ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে দায়িত্ব পালনকালে সহকর্মীকে গুলি করে হত্যায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য কাউছার আলী দীর্ঘদিন ধরে মানসিক রোগে আক্রান্ত বলে দাবি করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। সোমবার (১০ জুন) কাউছার আলীর গ্রামের বাড়ি গেলে পরিবারের সদস্যরা এ দাবি করেন। কাউছার আলী কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের দৌলতখালী দাড়ের পাড়া এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়াত আলীর মাস্টারের ছোট ছেলে। পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন কাউসার। চাকরিতে প্রবেশের পাঁচ বছর পর ২০১০ সালে মানসিক রোগে আক্রান্ত হন তিনি। পরে সরকারিভাবে তাকে কয়েকবার পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। কাউসার মাদকাসক্ত ছিল কি না জানতে চাইলে পরিবারের সদস্যরা ও এলাকাবাসী বলেন, মাদকের সঙ্গে কাউসারের সম্পৃক্ততা ছিল না। কিন্তু সে মানসিক রোগে আক্রান্ত। মাঝেমধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়তেন। গ্রামের বাড়িতে কাউসারের স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছে। সন্তানেরা স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের নবম ও অষ্টম শ্রেণিতে লেখাপড়া করে। কাউসারের বিষয়ে জানতে চাইলে তার মা মাবিয়া খাতুন বলেন, ‘আমার ছেলে খুব ভালো। চাকরিতে যোগদানের পর ওর মাথায় সমস্যা দেখা দেয়। কাউসারের সঙ্গে শনিবার রাত ৮টায় শেষ কথা হয়। সে সময় আমার সঙ্গে ভালোভাবেই কথা বলেছে। মা কেমন আছো, আব্বা কেমন আছে জিজ্ঞেস করে। তবে গত কয়েকদিন ধবে বাড়িতে একটু কম কথা বলত।’ কাউসারের স্ত্রী নিলুফার ইয়াসমিন সাথী বলেন, ‘আমার স্বামী

মানসিক রোগে আক্রান্ত। তিনি মাঝেমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়তেন। তাকে কয়েকবার পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়েছে। সেই কাগজপত্রও আছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘পারিবারিকভাবে আমাদের কোনো সমস্যা ছিল না। যখন তার মানসিক সমস্যা শুরু হতো, তখন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কম যোগাযোগ করতেন এবং কথাও কম বলতেন। গত কয়েকদিন ধরেই কম কথা বলেছেন।’ কাউসারের প্রতিবেশী ও দৌলতপুর সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফার বলেন, ‘কাউসার চাকরিতে যোগদানের পাঁচ বছর পর মানসিক রোগে আক্রান্ত হন। পরবর্তীতে চিকিৎসা করানোর পরে সুস্থ হলে আবার তিনি চাকরিতে যোগদান করেন।’

উল্লেখ্য, শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে রাজধানীর গুলশান-বারিধারার কূটনীতিক এলাকায় ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে কাউসারের গুলিতে মনিরুল ইসলাম নামের এক পুলিশ কনস্টেবল নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন জাপান দূতাবাসের এক গাড়িচালকও। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে।