অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়

ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’ অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে। আরব সাগরে সৃষ্ট গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এই ঝড়ের বেগ ঘণ্টায় ১৭০ কিলোমিটার ছুঁয়ে ফেলতে পারে বলে নতুন বুলেটিনে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া ভবন।

শনিবার এক টুইটবার্তায় ইন্ডিয়ান মেটেরোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট (আইএমডি) জানিয়েছে, সাগরে উদ্ভূত হওয়ার পর থেকেই ‘বিপর্যয়’ উত্তর ও উত্তরপশ্চিমদিকে সরে যাচ্ছে এবং ভারতের কোনো উপকূলে সরাসরি এই ঝড়ের আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা নেই। তবে ঝড়ের গতিপথের মধ্যে এই গুজরাট, কেরালা, কর্ণাটক ও লাক্ষাদ্বীপের পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। এ কারণেই জারি করা হয়েছে সতর্কতা।

‘বিপর্যয়’র প্রভাবে এই তিন রাজ্য ছাড়াও মহারাষ্ট্র ও গোয়ার উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ভারী বর্ষণ ও ঝড়ো হাওয়া দেখা দিতে পারে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে আইএমডি’র টুইটবার্তায়।

ভারতের আবহাওয়া বুলেটিনে বলা হয়, শেষ ছয় ঘণ্টায় ১১ কিলোমিটার বেগে উত্তরদিকে অগ্রসর হয়েছে অতি প্রবল ঘূ্র্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’। স্থানীয় সময় শুক্রবার দিবাগত রাত ২টা ৩০ মিনিটে সেটি পূর্ব-মধ্য আরব সাগরের উপরে অবস্থান করছিল, যা ভারতের গোয়া থেকে ৬৯০ কিমি পশ্চিম, মুম্বাই থেকে ৬৪০ কিমি পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিম এবং পোরবন্দরের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে ৬৪০ কিমি দূরে অবস্থান করছিল।

বুলেটিনে আরও বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় সেই অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আরও শক্তিশালী হবে এবং উত্তর ও উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে। এছাড়াও পরবর্তী তিন দিনে আরও উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে ‘বিপর্যয়’।

সুরাটের কালেক্টর বি কে ভাসাভা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, ঝড়টি রোববার বা সোমবার দক্ষিণ গুজরাটে পৌঁছাতে পারে। বর্তমানে, আমরা সতর্ক অবস্থায় রয়েছি। সব কর্মকর্তাকে সদরদপ্তরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসডিআরএফ (স্টেট ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স) টিমগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপকূলীয় গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের সতর্ক করা হয়েছে। প্রয়োজন হলে তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হবে।

আহমেদাবাদে আইএমডির আবহাওয়া কেন্দ্রের পরিচালক মনোরমা মোহান্তি বলেছেন, ১০, ১১ ও ১২ জুন ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বাতাসের গতিবেগ ৪৫ থেকে ৫৫ নট পর্যন্ত উঠতে পারে। কখনো কখনো তা ৬৫ নটও ছুঁতে পারে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার আইএমডি জানিয়েছিল, আরব সাগরের যে এলাকায় ‘বিপর্যয়’ সৃষ্টি হয়েছে— সেখান থেকে ক্রমশ উত্তর ও উত্তরপূর্ব দিকে আরব উপদ্বীপের দিকে এগোচ্ছে ঝড়টি। তবে শুক্রবার এক টুইটবার্তায় ভারতের আবহাওয়া দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, গতিপথে সামান্য পরিবর্তন এসেছে ঘূর্ণিঝড়টির। এ কারণে সরাসরি আরব উপদ্বীপে সেটির আছড়ে পড়ার সম্ভবনা কম।

‘বিপর্যয়’ নামটি বাংলাদেশের দেওয়া। জাতিসংঘভিত্তিক আবহাওয়া সংস্থা ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল ২০২০ সালে এই নামটি গ্রহণ করেছিল।

এমএফ