পাকিস্তানি সিনেমাকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেল যে ছবি

মুক্তির ১৬ দিন পরও হুমড়ি খেয়ে সিনেমাটি দেখছেন দর্শক।  বক্স অফিসে গড়ছে একের পর এক রেকর্ড।  সিনেমাটির নাম ‘দ্য লেজেন্ড অব মওলা জাট’।  পরিচালক বিলাল লাশহারি।

২০১৩ সালে প্রথম ছবি ‘ওয়ার’ দিয়েই শুরু বিলাল লাশহারির।  দ্বিতীয় সিনেমা ‘দ্য লেজেন্ড অব মওলা জাট’ তাকে নিয়ে গেল অন্য উচ্চতায়।  ছবিটি শুধু পরিচালনা নয়, ক্যামেরা, সম্পাদনা, চিত্রনাট্যের কাজও নিজেই সামলেছেন তিনি।

সিনেমাটি গত ১৩ অক্টোবর মুক্তি পায়।  এই প্রথম বিশ্বের ২৩টি দেশের ৪০০ হলে একযোগে মুক্তি পেল পাকিস্তানি কোনো সিনেমা।  প্রথমদিন থেকেই ভালো ব্যবসা করতে থাকে ‘দ্য লেজেন্ড অব মওলা জাট’।  মাত্র ১০ দিনে ১০০ কোটি পাকিস্তানি রুপি আয় করে পাকিস্তানি সিনেমার ইতিহাসে রেকর্ড গড়ে এ ছবি।

শুটিং শুরুর সময় খবর ছড়িয়েছিল, সিনেমার বাজেট ৫০ কোটি পাকিস্তানি রুপি।  শুনে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন অনেকে।  এ বাজেট অকল্পনীয়, কারণ এত টাকা তুলে আনার মতো এত বড় বাজার তো পাকিস্তানের সিনেমার নেই।

ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজ (আইএমডিবি) বলছে, প্রথম সপ্তাহে শুধু পাকিস্তান থেকেই সিনেমাটি ১১ কোটি ৩০ লাখ রুপি আয় করে, এটিও ছিল নতুন রেকর্ড।  সমালোচকেরা বলছেন, ছবিটি দিয়ে পাকিস্তানি সিনেমার নতুন জন্ম হলো।

পাঞ্জাবের এক গ্রামের পটভূমিতে সিনেমার গল্প। উপস্থাপনা ও একের পর এক চমক দর্শককে পর্দা থেকে চোখ সরাতে দেয়নি।  ঐতিহাসিক সিনেমার প্রেক্ষাপট মানেই বড় পরিসর।  সাজসজ্জা, মেকআপ, যথাযথভাবে সময়কে ধরতে না পারলে দর্শক মুখ ফিরিয়ে নেবেন।  এমন ভাবনা শুরু থেকেই পরিচালকের ছিল।

অ্যাকশন, ড্রামা, ফ্যান্টাসি ঘরানার সিনেমাটি আন্তর্জাতিক বাজারে পাকিস্তানি সিনেমাকে জায়গা করে দিচ্ছে।  দেশটির কোনো সিনেমা এর আগে ১০০ কোটি রুপি আয় করতে পারেনি।  ‘দ্য লেজেন্ড অব মওলা জাট’-এর প্রশংসা করে গার্ডিয়ান, বিবিসি, আল-জাজিরা, ভ্যারাইটিসহ বিশ্বের বড় বড় গণমাধ্যম খবর প্রকাশ করেছে।

সিনেমাটির প্রযোজক আমারা হিকমত আল-জাজিরাকে বলেন, ‘২০১৪ সাল থেকে আমরা সিনেমাটির কাজ শুরু করেছি।  চেয়েছি, এ সিনেমা আমাদের অন্য সিনেমা থেকে আলাদা করে নির্মাণ করতে।  আমাদের চেষ্টা সফল।  আশা করছি, সিনেমাটি পাকিস্তানি ইন্ডাস্ট্রিকে এগিয়ে নেবে।  যারা এখানে সিনেমায় বিনিয়োগ করেন, তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করবে।’

সিনেমায় মওলা জাট চরিত্রে অভিনয় করেছেন পাকিস্তানি গায়ক-অভিনেতা ফাওয়াদ খান।  আরও আছেন হামজা আলী আব্বাসী, মাহিরা খান, হুমাইমা মালিক, গহর রশিদ প্রমুখ।

২৮ অক্টোবর পর্যন্ত সিনেমাটির সর্বমোট আয় ছিল ১১৫ কোটি রুপি।  শুধু পাকিস্তান থেকেই রেকর্ড গড়ে আয় হয়েছে ৩৩ কোটি রুপি।  আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আয় করে ৮২ কোটি রুপি।  এটিও নতুন রেকর্ড।