শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বুলিংও র্যাগিং প্রতিরোধে নীতিমালা জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বুলিং ও র্যাগিং প্রতিরোধ সংক্রান্ত নীতিমালা ২০২৩।’
গত সপ্তাহে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এতদসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এ নীতিমালা অবিলম্বে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রযোজ্য হবে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩ থেকে ৫ সদস্যের বুলিং ও র্যাগিং প্রতিরোধ কমিটি করতে হবে। কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষার্থী-এমন কি পরিচালনা পরিষদের সদস্যের বিরুদ্ধে এতদসংক্রান্ত অভিযোগ পাওয়া গেলে প্রচলিত বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা নিতে হবে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, বুলিং ও র্যাগিং উৎসাহিত হয় এমন কার্যকলাপ, সমাবেশ, অনুষ্ঠান করা যাবে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্দিষ্ট শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের ওপর কাউন্সেলিংয়ের দায়িত্ব অর্পণ করা হবে।
অনেক দেরীতে হলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বুলিং ও র্যাগিং প্রতিরোধ সংক্রান্ত এ নীতিমালা প্রণয়ন একটি ভালো প্রয়াস। শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সাধারণভাবে মানুষ দীর্ঘদিন থেকেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের অমানবিক ও অমর্যাদাকর তৎপরতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলো। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশেষত কলেজ বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরিচিতি অনুষ্ঠানে ও শিক্ষা জীবন শেষে বিদায়কালীন অনুষ্ঠানে যে শোভন, রুচিকর ও দেশজ সংস্কৃতির বহি:প্রকাশ স্বাভাবিক ও ন্যায়সংগত, সেখানে এক ধরনের অশালীন, উৎকট রুচি প্রদর্শন, শারীরিক ও মানসিক নিপীড়নের যে অপকৌশল পরিলক্ষিত হয় সেসব রুখে দাঁড়ানো শিক্ষা-সংস্কৃতির স্বার্থেই প্রয়োজন।
এক শ্রেণীর উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও দলীয় আধিপত্য বিস্তারে নিরীহ শিক্ষার্থীদের মাঝে এক ধরনের ভয়ের সংস্কৃতি কায়েম করে। ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর নিগ্রহ, নির্যাতন, তাদের শিক্ষা জীবনকেই কেবল বিপর্যস্ত করে না, তাদের ভবিষ্যৎ জীবনকে এক ধরনের ট্রমার মধ্যে নিক্ষেপ করে। আইনের প্রয়োগ ছাড়া কিছু শিক্ষার্থীর এ ধরনের অমানবিক কার্যকলাপ কিছুতেই রোধ করা সম্ভব নয়। এ ধরনের পরিস্থিতি ছাত্র সমাজের জন্য কলঙ্কজনক হলেও নিরীহ সাধারণ ছাত্রছাত্রীর প্রতি বুলিং ও র্যাগিংয়ের মতো অশোভন ও অরুচিকর আচরণ বন্ধ করতে নীতিমালার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।