বগুড়া দুপচাঁচিয়া উপজেলায় চলতি মৌসুমে রোপা-আমন ধানের কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। ধানের বাম্পার ফলন দেখে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, বিস্তির্ণ মাঠ জুড়ে আমন ধানের সোনালী শীষ। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এই উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন আর দু’টি পৌরসভায় প্রায় ১১ হাজার ৬শত ২০ হেক্টর জমিতে ধানের চাষ করা হয়েছে। এবার এ ধানের মৌসুমে শুরু থেকে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় কুষকরা রোপা-আমন চাষে কোনো সমস্যায় পড়েন নি। বিশেষ করে বীজতলা থেকে ধানের চারা রোপণ করা, পরিচর্চা সহ সব মিলিয়ে মাঠে-মাঠে কৃষকের সোনালী ধানের সমারহ এখন দর্শনীয় হয়ে উঠেছে। এরই মাঝে অনেক কৃষক ধান কাটা-মাড়াই শুরু করেছেন। গোবিন্দপুর ইউনিয়নের মোড়গ্রামের কৃষক সাখাওয়াত হোসেন মল্লিক, আব্দুল মোমেন মল্লিক, শহিদুল প্রামানিক, শাহজাহান আলী মাষ্টার মোখলেছ প্রামানিক, শেরপুর গ্রামের উজ্জল হোসেন, আলাউদ্দিন শাহ সহ অনেকেই জানান, কৃষি অফিসের পরামর্শে যথাযথভাবে পরিচর্যা করায় জমিতে ধান ভালো হয়েছে। ইতিমধ্যে পাকা ধান কাঁটতে শুরু করেছেন। তবে কিছুদিন আগে বৃষ্টির কারনে ধান কিছুটা নষ্টও হয়েছে। এর পরও বিঘা প্রতি ১৭ থেকে ১৮ মন ধান পাচ্ছেন। প্রতি মন ধানের মূল্য প্রকারভেদে ১২শ ২০ টাকা থেকে ১২৬০ টাকা ধরে বেচা-কেনা হচ্ছে। তারা আশা করেছেন ধানের দামও ভালো পাবেন। গতকাল মঙ্গলবার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মুহাম্মদ সাইফুল আবেদীন জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১১ হাজার ৬শত ২০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা অর্জিতও হয়েছে। ধানের চারা রোপণের শুরু থেকেই ভালো মানের বীজ জমির উর্বরতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে কৃষকদেরকে উদ্বুদ্ধ করেছেন। উপজেলায় প্রায় ৮শত হেক্টর জমিতে ধান কাটা-মাড়াই হয়েছে। আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই উপজেলার সব জমির ধান কাটা-মাড়াই শেষ হবে বলেও আশা করছেন। এ ব্যাপারে কৃষক জিয়ানগর চিচুরিয়া গ্রামের মিল্টন রহমান জানান, প্রতি বিঘা ধান ৩০ শতাংশ ধান কাটার মুজুরি হিসাবে ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা এবং মাড়াই করতে প্রতি বিঘা ৩০ শতাংশ ৫০০ টাকা দিতে হচ্ছে। প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হওয়ায় এবার ফলনও ভালো হয়েছে। যদিও এখনও পুরোদমে ধান কাটা-মাড়াই শুরু হয় নাই। এরই মাঝে যে সব এলাকা ধান পেকেছে সেখানে ধান কাটা-মাড়াইয়ের ধুম পড়েছে। কৃষকরা ধানকাটা-মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। উল্লেখ্য দুপচাঁচিয়ায় আমন ধান-চাল সংগ্রহের উদ্বোধন গত বৃহস্পতিবার করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে দুপচাঁচিয়া উপজেলায় ৫৬৪৪ মেট্রিকটন চাল ৫০টাকা কেজি দরে এবং ১২৫ মেট্রিকটন আমন ধান ৩৪ টাকা কেজি দরে সংগ্রহের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়। আগামী ২৮ ফেব্রæয়ারি ২০২৬ পর্যন্ত এই ধান-চাল সংগ্রহের সময় নির্ধারণ রয়েছে।