শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যা নিয়ে বর্তমানে কানাডা-ভারত সম্পর্ক তলানিতে। কানাডা সরকারের অভিযোগ, সে দেশে অবস্থানরত ভারতীয় প্রতিনিধিরা এমন সব কর্মকাণ্ডে জড়িত রয়েছেন; যা কানাডার নাগরিকদের নিরাপত্তা হুমকিতে ফেলছে। অভিযোগের জের ধরে দুই দেশই একে অপরের কূটনীতিকদের বহিষ্কার করেছে।
তবে দেশটির মধ্যে চলমান কূটনৈতিক উত্তেজনায় অবশেষে মুখ খুলল যুক্তরাষ্ট্র। কানাডার অভিযোগের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিতে ভারতকে আহ্বান জানিয়েছে দেশটি। বিশ্ব রাজনীতিতে কানাডা ও ভারত—দুটি দেশই যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হিসেবে পরিচিত। খবর হিন্দুস্তান টাইস।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেছেন, কানাডার বিষয়ে, আমরা স্পষ্ট করেছি যে তাদের অভিযোগগুলো অত্যন্ত গুরুতর এবং সেগুলো গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিত। আমরা চাই ভারত সরকার এই তদন্তে কানাডার সঙ্গে সহযোগিতা করুক।
আরেক প্রশ্নের জবাবে মিলার বলেন, অবশ্যই, তারা তা করেনি। বরং তারা ভিন্ন পথ বেছে নিয়েছে।
নিজ্জর নিহত হওয়ার পর ২০২৩ সালে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সে দেশের সংসদে ওই হত্যার সঙ্গে ভারত জড়িত বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। এ নিয়ে তখন থেকেই দুই দেশের সম্পর্কে ব্যাপক অবনতি হয়। এমনকি ভারত থেকে কানাডার কয়েক ডজন কূটনৈতিককে প্রত্যাহার করতে চাপ দেয় নয়াদিল্লি। এ ছাড়া কানাডার নাগরিকদের জন্য ভিসা সেবা স্থগিত করে দেয় ভারত সরকার।
গত সোমবার সাম্প্রতিকতম উত্তেজনার শুরু হয়। ওই দিন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, তারা ‘কূটনৈতিক যোগাযোগে’ ইঙ্গিত পেয়েছে যে কানাডায় নিজ্জর হত্যার ঘটনার তদন্তে সেখানকার ভারতীয় কূটনীতিকেরা ‘ফৌজদারি অপরাধে সংশ্লিষ্ট’ থাকতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে ভারত দীর্ঘদিন ধরে ট্রুডোর অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। সোমবার ভারতীয় কূটনীতিকদের ওপর কানাডার তদন্তের পদক্ষেপকে প্রত্যাখ্যান করে। তাদের দাবি, রাজনৈতিক এজেন্ডার অংশ হিসেবে এই কাজ করছেন ট্রুডো।
২০২৩ সালে কানাডায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হন খালিস্তানপন্থী নেতা নিজ্জর। তিনি ভারতের পাঞ্জাবে শিখ সম্প্রদায়ের জন্য ‘খালিস্তান’ নামে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে ছিলেন। নিজ্জর হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই এর সঙ্গে ভারতের জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে আসছিলেন ট্রুডো। তবে সে অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছে ভারত সরকার।