৮৫ দিন পর নরসিংদীতে ট্রেনে কাটা পড়া পাঁচ জনের পরিচয় শনাক্ত

বেওয়ারিশ লাশ হিসেব নরসিংদী রেলওয়ে কবরস্থানে পাঁচ জনকে দাফন করা হয়, অবশেষে জানা গেল তাদের পরিচয়।

নরসিংদীর রায়পুরায় গত ৮ জুলাই ভোরে রেললাইনের ১৫ গজের মধ্য থেকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ৫ মরদেহ উদ্ধারের ৮৫ দিন পর নাম-পরিচয় শনাক্ত করার দাবি করেছে ভৈরব ও নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নরসিংদী রেলওয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ তদন্তে নেমে নিহত ব্যক্তিদের পরিচয় উদ্ধার করেন। বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে এর সত্যতা নিশ্চিত করেন ভৈরব রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলীম হোসেন শিকদার।

গত ৮ জুলাই সকালে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মেথিকান্দা রেলস্টেশনসংলগ্ন কমলপুর এলাকার রেললাইন থেকে ট্রেনে কাটা পড়ে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করে রেলওয়ে পুলিশ। তাদের মধ্যে তিনজনেরই শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন ছিল, দুজনের শরীর দ্বিখণ্ডিত আর চারজনের হাত-পা বিচ্ছিন্ন ছিল। নিহত ব্যক্তিদের ডিএনএ ও ভিসেরা টেস্টের জন্য উদ্ধার করা আলামত ঢাকায় পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত শেষে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে নরসিংদী রেলওয়ে কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।

নিহত পাঁচজন হলো- সিলেটের কুমারপাড়া এলাকার আব্দুল্লাহ ওরফে সাব্বির (১৬), হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর থানার হরেপুর গ্রামের আরিফ মিয়ার ছেলে রাব্বি (১৫), মৌলভীবাজারের কুলাউড়া রেলস্টেশন এলাকার সিয়াম (১৪), ময়মনসিংহ বাসস্ট্যান্ড এলাকার আল আমিন (১২) এবং সেলিম (২৫)। নিহতরা সবাই টোকাই এবং ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করতো। মৃত্যুর সময়ও তারা প্রত্যেকেই নেশাগ্রস্থ ছিলেন।

নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, মারা যাওয়ার আগে তারা ট্রেনের ছাদে বসে নেশা করছিলেন। পরে ট্রেনটি মেথিকান্দা অতিক্রম করার সময় একজন ছাদ থেকে পড়ে যাচ্ছিল, তাকে বাঁচাতে গিয়েই পাঁচজন একসাথে নিচে পড়ে মারা যায়।

জানতে চাইলে ভৈরব রেলওয়ে থানার ওসি মো. আলীম হোসেন শিকদার বলেন, ‘নিহত ব্যক্তিদের পরিচয় শনাক্ত করতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হয়েছে। দুর্ঘটনার বিস্তারিত ও নিহত পাঁচজনের মধ্যে দুজনের পূর্ণাঙ্গ পরিচয় ও তিনজনের শুধু নাম জানতে পেরেছি আমরা। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে চারজন টোকাই ছিল আর একজন ভিক্ষাবৃত্তি করত। নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ঢাকাগামী নোয়াখালী এক্সপ্রেস ট্রেনের ছাদ থেকে একসঙ্গে ছিটকে পড়ে ওই ট্রেনে কাটা পড়েই পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছিল।’