ওজন কমাবে ব্ল্যাক কফি

চিনি, দুধ, ক্রিম ছাড়া কালো কফিতে ক্যালরির পরিমাণ খুবই কম। অবাক হওয়ার মতো কিছু নয়, সময় বুঝে পান করলে কফি ওজন কমানোতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। কফিতে যারা অভ্যস্ত, সকালে ঘুম থেকে উঠে এই পানীয়তে চুমুক না দিলে যেন তাদের আড়ষ্টতা কাটতেই চায় না।

একেকজন একেক রকম কফি পছন্দ করেন। কেউ দুধ ক্রিম চিনি দিয়ে, কেউ বা কালো কফি। তবে কোমরের পরিধি কমাতে চাইলে বেছে নিতে হবে কালো কফি। আর পান করার নিয়মটাও জানা থাকতে হবে।

এই বিষয়ে নিউ ইয়র্কয়ের পুষ্টিবিদ লরা বুরাক ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “খেয়াল করে দেখেছি, আমার ক্লায়েন্টদের মধ্যে যারা ডায়েট নিয়ে যুদ্ধ করছেন তাদের অনেকেই খাবারের পরিবর্তে দুপুর তিনটার দিকে এক কাপ কফি পান করেন। এভাবে খাবার না খাওয়ার ফলে যেমন ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ কমে তেমনি কফি সাময়িকভাবে ক্ষুধাও কমায়। তবে আমার পরামর্শ হল খিদা পেলে খাওয়া উচিত।”

এর মানে হল ওজন কমানোর রুটিনে কফি সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। তবে মানতে হবে কিছু নিয়ম।

কফি পেট ভরা অনুভূতি দেয়: নিয়মিত কফি পানের অভ্যাস থাকলে পেটভরা অনুভূতির পাশাপাশি তৃপ্তিকর মনোভাব তৈরি করে। ফলে অতিরিক্ত খাওয়া কমানোর পাশাপাশি অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া থেকেও বিরত থাকা যায়। বুরাক বলেন, “কফি পান করার মানে হল পেটে যাচ্ছে তরল উপাদান। যা কিনা পাকস্থলী পূর্ণ রাখতে সহায়তা করে। ফলে সঠিক পরিমাণে খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে ওঠে। যে কারণে ওজন কমানোতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।”

শক্তি ও বিপাক প্রক্রিয়ার গতি বাড়ায় : কফিতে থাকা ক্যাফেইন বিপাক প্রক্রিয়ার গতি বাড়ানোর পাশাপাশি দুর্বলতা কাটাতেও সাহায্য করে।
বুরাক ব্যাখ্যা করেন, “সকালে ওঠার পর কফি পানের ফলে ক্যাফেইনের কারণে দেহের জড়াতা কাটতে সাহায্য করে। যে কারণে ব্যায়াম করার আলসেমি দূর হয়।”
তিনি আরও বলেন, “তবে অবশ্যই রাতে পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করতে হবে। শক্তি বাড়াতে বা আলস্য কাটাতে ঘন ঘন কফি পানের অভ্যাস হিতে বিপরীত হবে।”

কম ক্যালরির পানীয় : কালো কফিতে ক্যালরি অনেক কম। বুরাক বলেন, “এক কাপ কালো কফিতে ক্যালরির পরিমাণ থাকে পাঁচের কম বা একটু বেশি। তাই কোনো চিনি, দুধ বা অন্যান্য কোনো উপাদান যোগ না করে শুধু কালো কফি পান করার মানে হল, তেমন কোনো ক্যালরি গ্রহণ করা হচ্ছে না।”
তাই অন্যান্য পানীয় পানের চাইতে কালো কফি ওজন কমানোর ক্ষেত্রে আদর্শ পানীয়।

অতিরিক্ত উপকরণের ব্যাপারে সাবধান : নানান উপকরণ দিয়ে কফি পান করতে বেশ লাগে। হতে পারে সেটা দুধ দিয়ে কিংবা আলাদা ক্রিম, সিরাপ মিশিয়ে।
তবে বুরাক বলেন, “এসব উপাদান দিয়ে কফি গ্রহণ করার মানে হলে ‘চিনির বোমা’ পেটে যাচ্ছে। এমকি বাজারে কিনতে পাওয়া যায় এরকম বাদাম, বীজ বা ওটমিল্ক স্বাস্থ্যকর শোনালেও, সেখানেও চিনি মিশ্রিত করা থাকে।”

এই পুষ্টিবিদ আরও বলেন, “ওজন কমানোর লক্ষ্যে থাকুন বা না থাকুন, কফিতে অতিরিক্ত উপাদান মিশ্রণের ক্ষেত্রে সাবধান থাকতে হবে। কারণ এসব উপাদান দেওয়া মানেই অতিরিক্ত অপ্রয়োজনীয় ক্যালরি গ্রহণ করা হচ্ছে। ফলে বাড়ছে চিনি ও স্যাচুরেইটেড ফ্যাট গ্রহণের পরিমাণ।”
তিনি পরামর্শ দেন, “দিনে কয়েক কাপ কফির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। তাহলে শারীরিক সমস্যা হবে না পাশাপাশি ঘুমেও ব্যাঘাত ঘটাবে না। আরও মনে রাখতে হবে, কফি কিন্তু পানি নয়। তাই শরীর আর্দ্র রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।”