দেশের বৃহত্তম ভোগ্যপণ্যের পাইকারী বাজার খাতুনগঞ্জ ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে উঠছে। লেনদেন ও বেচাকেনা শুরু হয়েছে। তবে প্রায় বারবার প্রতারণার খপ্পরে পড়ে অনেক ব্যবসায়ী পুঁজি হারিয়ে আস্থাহীনতায় ভুগছে। অনেক ব্যবসায়ী বেশি মুনাফার আশায় বাকিতে লেনদেন করলেও এখন নগদ ছাড়া কম মুনাফায় মালামাল বিক্রি করছে।
এদিকে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পণ্য নিয়ে ট্রাক, মিনিট্রাক ও পিকআপ ভ্যানসহ কয়েকশ মালবাহী যান প্রবেশ করে খাতুনগঞ্জে। একইভাবে খাতুনগঞ্জ থেকে পণ্য নিয়ে শত শত মালবাহী যান ছুটে যায় দেশের বিভিন্ন এলাকায়। খাতুনগঞ্জ ঘিরে মালবাহী যানবাহনের চলাচলই বলে দেয় এই বাজারে বাণিজ্যের চিত্র।
সাম্প্রতিক সহিংসতা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় খাতুনগঞ্জে মালবাহী যান চলাচল কমে গেছে। পণ্য কিনতে আসা ব্যবসায়ীদের আনাগোনাও ছিল কম। গাড়িতে পণ্য উঠানামা করে জীবিকা নির্বাহ করা শ্রমিকদের ব্যস্ততাও কম দেখা গেছে। তবে গেল কয়েকদিনের চেয়ে আনাগোনা বেড়েছে শ্রমিকদের।
ব্যবসায়ীরা জানান, সাধারণত ক্রেতারা পণ্যের কথা বললে কোনো লেনদেন ছাড়াই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিজ দায়িত্বে পণ্য পাঠিয়ে দেন খাতুনগঞ্জের পাইকারি ব্যবসায়ীরা। পরবর্তীতে কেনা পণ্যের মূল্য পরিশোধ করতেন পাইকারি ক্রেতারা। তবে একের পর এক অর্থিক জালিয়াতিসহ নানা ঘটনায় এখন আর ক্রেতাদের বিশ্বাস করেন না ব্যবসায়ীরা। সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধ না করলে পণ্য সরবরাহ করছেন না তারা।
শুধু তাই নয়, দেশে গত সপ্তাহে সরকার পতনের পর পুলিশ কর্মবিরতিতে যাওয়ায় লুট হওয়ার শঙ্কায় পণ্য সরবরাহ বন্ধ রাখেন ব্যবসায়ীরা। এরমধ্যে চলতি সপ্তাহে কিছু কিছু এলাকায় সীমিত পরিসরে পুলিশ কর্মস্থলে ফিরলেও এখনও টহলে দেখা যায়নি। তাই মোকাম থেকে পণ্য নিয়ে আসা ও দেশের বিভিন্নস্থানে পণ্য সরবরাহে স্বস্তি পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। তবে স্থানীয় বাজারে পণ্যের ঘাটতি তৈরি হওয়ায় কোনো কোনো পাইকারি ক্রেতা নিজ দায়িত্বে পণ্য কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যেতে শুরু করেছেন।
এই বিষয়ে চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার ব্যবসায়ীরা জানান, খাতুনগঞ্জ ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে, তবে ব্যবসায়ীদের মধ্যে সব মিলিয়ে যে আতঙ্ক ছিল, সেটা পুরোপরি কাটেনি। উত্তরবঙ্গসহ বিভিন্ন মোকাম থেকে পণ্য আসছে না, দূরপাল্লার গাড়ি থেকে পণ্য লুট হওয়ার শঙ্কায় আছে সবাই।
পুলিশ ফিরলেও এখনও টহলে নামেনি, বেচাবিক্রি কম, পুলিশ না থাকায় ভরসা পাচ্ছে না কেউ। তবে গত সপ্তাহের চেয়ে চলতি সপ্তাহে পরিস্থিতি কিছুটা বদলে গেছে।