উলিপুরে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৩ শত ৫০ টাকা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ

কুড়িগ্রামের উলিপুরে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম ৩শত ৫০টাকা দরে খুচরা দোকানে বিক্রয় হচ্ছে। মরিচ ছাড়াও অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় সবজির দামও দ্বিগুন হয়েছে কয়েকদিনের ব্যাবধানে। এতে করে কমে গেছে বেঁচাকেনা। এদিকে সবজির দাম দ্বিগুন হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষজন।
সরেজমিন শনিবার (১৩ জুলাই) উলিপুরের কাঁচা বাজার গিয়ে দেখা যায়, আলু (স্টিক) পাইকারী প্রতি কেজি ৫০ টাকা, খুচরা ৬০ টাকা, দেশী আলু পাইকারী ৬০ টাকা, খুচরা ৭০ টাকা, পেঁয়াজ পাইকারী ১শ ১০ টাকা, খুচরা ১শ ৩০ টাকা, রসুন পাইকারী ১শ ৮০ টাকা, খুচরা ২শ ২০ টাকা, পটল পাইকারী ৩৬ টাকা, খুচরা ৪০ টাকা, মিষ্ট কুমড়া পাইকারী ২৪ টাকা, খুচরা ৩৫ টাকা, আঁদা পাইকারী ৩শ টাকা, খুচরা ৩শ ২০ টাকা, শুকনা মরিচ পাইকারী ৪শ টাকা, খুচরা ৪শ ৫০ টাকা, শসা পাইকারী ৬০ টাকা, খুচরা ৭০ টাকা, বেগুন পাইকারী ৫০ টাকা, খুচরা ৬০ টাকা, করলা পাইকারী ১শ টাকা, খুচরা ১শ ২০ টাকা, কদোয়া পাইকারী ৫০ টাকা, খুচরা ৬০ টাকা,  কাকেল্লা পাইকারী ৬০ টাকা, খুচরা ৭০ টাকা, বরবটি পাইকারী ৮০ টাকা, খুচরা ১শ টাকা, পেপে পাইকারী ৪০ টাকা, খুচরা ৫০ টাকা, ভ্যান্ডি পাইকারী ৫০ টাকা, খুচরা ৬০ টাকা, লাউ পাইকারী প্রতি পিচ ৬০ টাকা, খুচরা ৭০ ও কাঁচা মরিচ পাইকারী প্রতি কেজি ৩শ ২০ টাকা, খুচরা ৩শ ৫০ টাকা দরে বেচাকেনা  হচ্ছে। নিত্য প্রয়োজনীয় সবজির দাম নাগালের বাহিরে হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ জন।
বাজার করতে আসা ক্রেতা কলিম উদ্দিন (৫০) জানান, এক পোয়া (২৫০ গ্রাম) মরিচ ৯০ টাকা দিয়ে নিয়েছি। এতো চড়া দামে আগে কখনো মরিচ ক্রয় করেনি। যে হারে সবজিসহ অন্যান্য জিনিসের দাম দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এতে করে আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের চাহিদা বেশি কিছু না। ডাল-ভর্তা খেয়ে জীবন পার করতে চাই কিন্তু ভর্তায় ব্যবহার করা মরিচের যে দাম আমরা যাবো কোথায়।
নুরভানু (৫৫) ও সবেদা (৬০) নামের দুই ক্রেতা পাশ^বর্তী চিলমারী ইউনিয়নের রানীগঞ্জ থেকে উলিপুর বাজারের এসেছেন কাঁচা বাজার করতে। তারা বলেন, দাম কম হবে ভেবে উলিপুরে আসলাম। অথচ জিনিসপত্রের দাম দ্বিগুন। মনে হয় সবজি বাজারে আগুন লেগেছে। দিন দিন জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে নিম্ন আয়ের মানুষজন বিপাকে পরেছেন। বর্তমানে কাঁচা বাজারের উর্দ্ধগতিতে মানুষ আরও দিশেহারা। বাজার গুলো মনিটরিং করার দাবী জানান কর্তৃপক্ষের কাছে।
গ্রামীন বাজারের সবজি দোকানী আব্দুর রহমান ও আকাশ মিয়া বলেন, মরিচের দাম প্রতিদিন বেড়েই চলছে। পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে সবজি কিনে এনে গ্রামে বিক্রি করতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। বেশি দাম হওয়ায় অনেক ক্রেতাই দাম শোনার পর ফিরে যান। আবার অনেকেই সামান্য পরিমান নিয়ে যায়। আগের থেকে বেঁচাকেনা অনেক কমে গেছে। এতে করে আমাদের লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে।
উলিপুর বাজারের পাইকারী ব্যবসায়ী মিলন মিয়া জানান, বিভিন্ন জায়গা থেকে সবজি নিয়ে এসে বাজারে পাইকারীতে বিক্রি করা হয়। সম্প্রতি বৃষ্টি ও বন্যার কারনে সকল সবজির মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। বন্যার পানিতে মরিচের ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় মরিচের আমদানী কমে গেছে। এ কারনে মরিচের দাম দ্বিগুন বৃদ্ধি পেয়েছে।
আড়ৎ ব্যবসায়ী মজুর উদ্দিন (৬৫) বলেন, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন মোকামে সবজির দাম বৃদ্ধি পেলে আমাদের এখানেও দাম বেড়ে যায়। বেশি দামে সবজি ক্রয় করার কারনে বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। এছাড়া সবজিসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আগের থেকে বেঁচা কেনা অনেক কমে গেছে। একারণে ক্রয়কৃত সবজিতে পঁচন ধরে লোকশান গুনতে হচ্ছে আমাদের। জিনিসপত্রের দাম যত বাড়বে আমাদের দূর্ভোগও তত বাড়বে বলে জানান এ ব্যবসায়ী।