পি কে হালদারের ২২ বছরের কারাদণ্ড; জরিমানা ৩৪৮ কোটি টাকা

প্রশান্ত কুমার হালদারকে (যিনি পি.কে. হালদার নামে পরিচিত) দুর্নীতির দায়ে ১০ বছর ও অর্থ পাচারের দায়ে ১২ বছর, মোট ২২ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে ৩৪৮ কোটি টাকা জরিমানাও করা হয়। রোববার দুপুরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। এছাড়া এই মামলার বাকি ১৩ আসামিকে আদালত সাত বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন। গত ৪ অক্টোবর একই আদালত রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন।

তার বিরুদ্ধে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্নসাৎ এবং পাচারের অভিযোগ রয়েছে। মূল অভিযুক্ত পি কে হালদার ভারতের একটি কারাগারে বন্দী থাকায় তিনি বা তার পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী মীর আহমেদ আলম সালাম রায়ের পর সাংবাদিকদের কাছে মন্তব্য করেন, তাকে বাংলাদেশে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হচ্ছিল। তবে যেহেতু কলকাতায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা চলমান, আমরা আশা করছি এই রায়ের মাধ্যমে আমরা তাকে নিয়ে আসার ব্যবস্থা দ্রুত করতে পারবো। অভিযুক্ত বাকি আসামিদের মধ্যে চারজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এই আসামিদের সবাই বর্তমানে কারাভোগ করছেন। রায়ের সময় তাদের কারাগার থেকে আদালতে নিয়ে আসা হয়। পরে রায় ঘোষণা শেষে তাদের আবার কারাগারে পাঠানো হয়। কারাগারে থাকা এই চার আসামি অবশ্য এ বছরের জুলাইয়ে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার চেয়েছিলেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন-পি কে হালদারের আইনজীবী সুকুমার মৃধা, মেয়ে অনিন্দিতা মৃধা, সহযোগী অবন্তিকা বড়াল ও চাচাতো ভাই শঙ্খ বেপারী, পি কে হালদারের মা লীলাবতী হালদার এবং ভাই প্রীতিশ কুমার হালদার এবং সহযোগী পূর্ণিমা রানী হালদার, অমিতাভ অধিকারী, রাজীব সোম, সুব্রত দাস, অনঙ্গ মোহন রায়, উত্তম কুমার মিস্ত্রি এবং স্বপন কুমার মিস্ত্রি।
অর্থপাচারের অভিযোগে গত বছরের ১৪ মে ভারতের অশোকনগরে পি কে হালদার গ্রেপ্তার হন। সুকুমার, অনিন্দিতা, অবন্তিকা ও শঙ্খ আগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন এবং কারা হেফাজতে আছেন। সুকুমার, শঙ্খ ও অনিন্দিতা এর আগে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পি কে হালদারসহ ১০ জন পলাতক।
আদালত এই মামলায় অভিযোগকারীসহ রাষ্ট্রপক্ষের ১০৮ জন সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন। গত বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি পিকে হালদারসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন। অভিযোগপত্রে পি কে হালদারসহ ১০ জনকে পলাতক দেখানো হয়েছে এবং তাদের অনুপস্থিতিতে বিচার চলছে। গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর একই মামলায় পি কে হালদারসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
প্রায় ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি পি কে হালদারের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।