ভালোয় ভালোয় কেটে পড়ুন, নয়তো ভয়ানক পরিণতি হবে: ফখরুল

আওয়ামী লীগকে আগে থাকতে ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, না হলে ক্ষমতাসীন পরিণতি ‘ভয়াবহ’ হবে।

কুমিল্লা টাউন হল মাঠে শনিবার (২৬ নভেম্বর) বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে তিনি বলেন, আব্বাস উদ্দিনের একটি গান আছে ‘আগে জানলে তোর ভাঙা নৌকায় উঠতাম না’। এই গান এখন সবাই গায়। ভালোয় ভালোয় কেটে পড়ুন, নয়তো ভয়ানক পরিণতি হবে।

বিএনপি মহাসচিব ফখরুল বলেন, ‘তত্ত্বাবধয়াক সরকার ছাড়া এই দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। সংসদ ভেঙে দিতে হবে। ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে। তারপরেই নির্বাচন হবে। তার আগে নয়। নতুন নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচন হতে হবে। তার আগে নয়।

শনিবার বেলা ১২টার দিকে সমাবেশ শুরু হয়। এতে আরও বক্তব্য রাখেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আমিন উর রশিদ ইয়াছিন, সাংগঠনিক সম্পাদক (কুমিল্লা বিভাগ) মোস্তাক মিয়া। সভাপতিত্ব করেন কুমিল্লা দক্ষিন জেলা বিএনপির আহবায়ক হাজী আমিনুর রশীদ ইয়াছিন।

সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী, স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে ভোলায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অনেক ভাই প্রাণ দিয়েছেন। তাদের খুনের বিচার, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি, ৩৫ হাজার মিথ্যা মামলার প্রত্যাহারের দাবিতে এই মহাসমাবেশ।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার আবারও ২০১৪-১৮ সালের নির্বাচনের মতো নির্বাচন দেওয়ার পাঁয়তারা করছে। তারপর পাতানো নির্বাচনে জিতে আবারও যেমন খুশি তেমন চুরি করবে। ২০১৪ সালে কেউ ভোট দিতে যায়নি। ২০১৮ তে আগের রাতেই ভোট চুরি করেছেন। তিনি নাকি আবার ক্ষমতায় যাবেন। যশোরে সভায় তিনি বলেছেন আওয়ামীলীগ আসলে জনগণ শান্তি পায়, আপনারা কি শান্তি পান?’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আগের মত ভোট হবে। তিনি আবারও ক্ষমতায় থাকতে চায়। তিনি ইভিএমে কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকতে চায়। ঘরে ঘরে রেড দিচ্ছে। এতে করে কী ১০ তারিখ সমাবেশ বন্ধ করতে পারবে, পারবে না। এদের লজ্জা নেই, এদের চামড়া গণ্ডারের মত হয়ে গেছে।

ফখরুল বলেন, ‘একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, একটি সুখী বাংলাদেশ দেখার জন্য দেশ স্বাধীন করেছিলাম। স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসেও মানুষ আজ খাবারের জন্য দৌড়ায়। অভাব অনটনে আছে।’

ফখরুল বলেন, ‘আমাদের কথা পরিষ্কার। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করব। আওয়ামী লীগের কথা বলতে গেলে রাত দিন পার হয়ে যাবে। রিজার্ভ নিয়ে কথা বলে। রিজার্ভ খেয়ে ফেলেছে। চিবিয়ে খায় নি, গিলে খেয়ে ফেলেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছে, আগামী তিন মাস ব্যয় বহন করার মত রিজার্ভ নাই। তারা সব খেয়ে ফেলেছে। গত ১০ বছরে তারা ৮৬ লক্ষ কোটি টাকা পাচার করেছে। বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার তারা পাচার করে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। তারা আমাদেরকে ভাতে মারছে, পানিতে মারছে, কর্মসংস্থানে মারছে। এমন কোন দ্রব্য নাই যার দাম বাড়ে নাই। তাদের লোকেদের টাকা বেড়েছে। শতকরা ৪২ জন লোক দারিদ্র্য সীমার নীচে বাস করে।’