বেকার জীবন ভয়ঙ্কর এলোমেলো

বেকার জীবন সাধারণত ভয়ঙ্কর এলোমেলো হয়। এই জীবন যারা পার করেছে বা করছে তারা হাঁড়ে হাঁড়ে টের পায়, বেকার জীবন কতটা যন্ত্রণার। এর মাঝেও ক্যাম্পাস জীবনের কিছু পাশে দাঁড়ানোর মানুষের গল্প থাকে যা আমাদের অনুপ্রেরণা জোগায়। অনুপ্রেরণা দেয় খারাপ সময়ে একটি মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে থেকে তার সাফল্য খুঁজতে। চারপাশে এতো খারাপের ভিড়ে সত্যিকারের ভালোবাসা এখনও আছে বলেই পৃথিবী দম্ভের সাথে তার অস্তিত্বের জানান দিয়ে টিকে আছে।

পড়াশোনা শেষে যখন একজন ছাত্র বেকার থাকে তখন সমাজ সাধারণত ভালো চোখে মেনে নেয় না। কিন্তু ছাত্ররাও তো মানুষ নাকি! জীবনকে গুছিয়ে নিতে একটু সময় তো অন্তত লাগে। এই সময়টুকু অন্তত দেয়া উচিৎ। আমাদের সমাজ এই সময়টুকুও দিতে চায় না। অনেকেই আছে, এই বেকারের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আত্মহত্যার মতো পথও বেছে নেয়।

আমাদের দেশের জনসংখ্যা বিবেচনায় আনলে দেখা যাবে, এদেশে আয়তনের তুলনায় যার পরিমাণ অনেক বেশি। যার কারণে দেখায় যায় শিক্ষিত লোকজনের তুলনায় কর্মসংস্থানের সুযোগ অনেক কম। তাছাড়া আমাদের দেশে সাধারণত সবায় সরকারি চাকরির পেছনে ছুটে। কারণ সরকারি চাকরি এদেশে সোনার হরিণ। সরকারি চাকরির পেছনে ছুটতে ছুটতে দেখা যায় ৩-৪ বছর চলে যায়, তাও অনেকে একটা চাকরি ম্যানেজ করতে পারে না। ফলে বেকারের সংখ্যাও দিনদিন বৃদ্ধি পেতে থাকে।

উন্নত দেশগুলোতে দেখা যায়, পড়াশোনা শেষ করার সাথে সাথে বাস্তবমুখী শিক্ষা অর্জন করার ফলে তারা নিজেরাই উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ শুরু করে। কিন্তু আমাদের দেশে একটা সমস্যা হলো- কেউ সাধারণত উদ্যোক্তা হতে চায় না। একজন শিক্ষিত মানুষ চাইলেই নিজে কিছু শুরু করতে পারে, এটাও অনেকে বুঝতে চায় না। সবার একটা ধারণা নিয়ে চলে, মোটামুটি একটা চাকরি ম্যানেজ করতে পারলেই জীবনের সব অর্জন শেষ করে ফেলেছে। কিন্তু বাস্তবতা তা নয়। যে সময় আমাদের দেশের শিক্ষিত যুব-সমাজ চাকরি খোঁজার পেছনে ব্যয় করে সেই সময়ে দেখা যায় একজন উদ্যোক্তা স্বাবলম্বী হয়ে অন্যকেও চাকরি দিচ্ছে। এসব বিষয়ে সরকারি উদ্যোগে জনসচেতনতা বাড়ানো উচিত।

শুধুই চাকরি করে স্বাবলম্বী হতে হবে এই ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে আমাদের যার যতটুকু সামর্থ্য আছে তা নিয়ে মাঠে নেমে পড়তে হবে। তাহলে বেকারত্বের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করা সম্ভব। অন্যদিকে, আমাদের দেশে শিক্ষাব্যবস্থাকে বাস্তবমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে রূপান্তরিত করতে হবে। যাতে আমাদের দেশের যুবসমাজ পড়াশোনা শেষ করে তারা নিজেরাই কিছু শুরু করতে পারে। প্রয়োজনে সরকারি চাকরিতে প্রবেশে বয়সসীমা শিথিল করতে হবে। এতে করে বেকারদের মধ্যে হতাশা কমবে।

লেখক : মোহাম্মদ বাপ্পারাজ
শিক্ষার্থী, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম কলেজ।