গৃহশ্রমিক সুরক্ষা, অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় নাগরিক সমাজ ও গৃহকর্মী ফোরামের সংলাপ

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারী) মোহাম্মদপুর অঞ্চলের গৃহকর্মী আঞ্চলিক ফোরামের আয়োজনে দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র সুনীতি প্রকল্পের সহযোগিতায় ডব্লিউবিবি কনফারেন্স হলে গৃহকর্মী সুরক্ষা, অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় নাগরিক সমাজ ও গৃহকর্মী ফোরামের সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যান নীতি ২০১৫ হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। প্রত্যেক গৃহকর্মীর যেমন দক্ষতা দরকার তেমনি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দরকার। তাদের দ্রুত শ্রম আইনে অন্তর্ভূক্ত করা জরুরি।
সময় এখন গৃহকর্ম ও গৃহকর্মীর সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির, শ্রমিক হিসেবে শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্তি শীর্ষক গৃহকর্মী সুরক্ষা অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় নাগরিক সমাজ ও গৃহকম ফোরামের সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন।
মোহাম্মদপুর গৃহশ্রমিক আঞ্চলিক ফোরামের সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস বেগম এর সভাপতিত্তে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মোহাম্মদপুর ৩৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ হোসেন খোকন , আবুর কালাম আজাদ সভাপতি টেনারী শ্রমিক ইউনিয়ন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র্র।
নিখিল ভদ্র , সম্পাদক কালের কন্ঠ, আরো উপস্থিত ছিলেন হোসনে আরা বেগম সিনিয়র হিসাব কর্মকর্তা দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র, অক্সফাম বাংলাদেশের সুনীতি প্রকল্পের প্রোগ্রাম কোয়ালিটি অফিসার বাসন্তী সন্ন্যাসী, দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র এর সুনীতি প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান , বাড্ডা গৃহশ্রমিক আঞ্চলিক ফোরামের সভাপতি ও সদস্যবৃন্দ, সমাজ সেবা অধিদপ্তর, যুব উন্নয়ন আহসানিয়া মিশন, সিভিল সোসাইটির ডব্লিউবিবি প্রতিনিধি, সূর্যের হাসি, পথশিশু প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মোহাম্মদপুর গৃহশ্রমিক আঞ্চলিক ফোরামের সাধারন সম্পাদক মর্জিনা সুলতানা।
আবুল কালাম আজাদ সভাপতি টেনারী শ্রমিক ইউনিয়ন। তিনি তার বক্তব্যের শুরুতেই আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান। ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রে তিনি ৪৯ বছর পর্যন্ত কাজ করার পরেও বলেন যে এখনও অনেক টেনারীতে শ্রমিকরা তাদের নিয়োগ পত্র এথনো পায়নি। তারা ১২-১৪ ঘন্টা কাজ করেও তাদের সাপ্তাহিক ছুটিও নাই। গৃহশ্রমিকদের উদ্যেশ্যে তিনি বলেন স্বাধীনতার পর আমাদের যারা শ্রমিক আছে তাদের জন্য কিছু করার কিন্ত সে কাজটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান করে যেতে পারেননি। স্বাধীনতার পরপরই শ্রমিকদের যে অধিকার আছে সেগুলো এ দেশের ট্রেড ইউনিয়ন দেখবে। কিন্ত সে জায়গা এখনও দুর্বল। ২০১১ সালে আইএলও কনভেনশন হয়েছে কিন্তু তা আজও গৃহশ্রমিক আইনে পরিনত হয় নাই।
ডিএনসিসি ওয়ার্ড ৩৪ এর কাউন্সিলর তার মূল্যবান বক্তব্যে বলেন যে, গৃহকর্মীদের জন্য নিজ নিজ জায়গা থেকে সহায়তা করছি কিনা যারা নেতৃত্তে আছি তারা সঠিক ভাবে কাজ করছি কিনা সততার সাথে কাজ করছি কিনা সে বিষয় আগে সচেতন হতে হবে। তিনি বলেন একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমি সব সময় সর্বক্ষেত্রে গৃহকর্মীদের সাথে থাকব। তিনি এই আয়োজন দেখে খুব খুশী হয়েছেন। তার মতে গৃহকর্মীদেও কথা বলার একটা জায়গা তৈরী হয়েছে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
হোসনে আরা (ডিএসকে) বলেন গৃহকর্মীদের এ্ই প্রকল্পে যুক্ত থাকতে পেরে তার নিজেকে ভাল লাগছে। তার মতে নিজেদেরকে আরো বেশী সচেতন হতে হবে। নীতিমালার বিষয় সবাই মিলে কাজ করতে হবে। নীতিমালাকে যেন সরকারী ভাবে আইনি স্বীকৃতির জন্য সব্ইাকে একত্রে কাজ করার কথা বলেন। তিনি আরো বলেন তার বাসায় কর্মরত একজন গৃহকর্মী আছে তাকে সে সপ্তাহে একদিন ছুটি দেন। সরকারী ছুটির দিনটি গৃহকর্মীদেরকে একজন সহযোগী হিসেবে তাকে দেখা উচিত এবং আমি যেমন ছুটি ও সুযোগ সুবিধা ভোগ করছি সেভাবে তাকেও ছুটি দেওয়া উচিত এবং বিনোদনের সুযোগ দেওয়া উচিত।
বাসন্তী সন্ন্যাসী প্রীতি হত্যার ঘটনার বিষয়টি নিয়ে বলেন যে, একজন গৃহকর্মী হত্যার শিকার হলো অথচ অধিকার নিয়ে আমি তাদের পক্ষ হয়ে দাড়াতে পারিনি। তার মতে প্রকল্প শেষ হলেও গৃহকর্মীরা মিলে যেন তাদের অধিকার আদায়ের জন্য একতাবদ্ধ হয়ে পেশার স্বীকৃতির জন্য লড়বে।
জাহানারা আক্তার স্বপ্না তার বক্তব্যে বলেন তার মতে উপস্থিত অংশগ্রহনকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন যে আপনারা আমাদের পেশার স্বীকৃতির ব্যবস্থা করুন। গৃহকর্মী প্রীতি এ বিষয়ে বলেন আমরা গরীব বলে আপনারা আমাদের অবঞ্জা করেন কেন? কেন আমাদেরকে শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্ত করেন না? আপনি যেমন ছুটি ভোগ করেন তেমনি আমি কেন ছুটি পাব না । বিজ্ঞপ্তি।