দরুদে ইবরাহিম পড়ার গুরুত্ব ও ফজিলত

রাসুল (সা.)-এর প্রতি দরুদ পাঠ অনেক বেশি ফজিলতের।  দরুদ পাঠ রহমত ও বরকত লাভের অন্যতম উপায়।  হাদিসে এর বিশেষ গুরুত্ব ও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে।

স্বয়ং আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনুল কারিমে মহানবী (সা.)-এর প্রতি দরুদ পাঠের নির্দেশ দিয়েছেন।

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ নবীর উপর রহমত অবতীর্ণ করেন এবং ফেরেশতারা তার জন্য রহমতের দোয়া করেন।  সুতরাং হে মুমিনগণ! তোমরাও তার প্রতি দরুদ পড়ো এবং অধিক পরিমাণে সালাম পাঠাও।  (সুরা আহজাব, আয়াত : ৫৬)

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলে আকরাম (সা.) বলেছেন, তোমরা আমার ওপর সালাত তথা দরুদ পড়; কারণ যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার সালাত তথা দরুদ পাঠ করবে আল্লাহ তাকে ১০ বার রহমত বর্ষণ করবেন। মুসলিম-১/৩০৬।

সালাতের মধ্যে দরুদে ইব্রাহিম পাঠ করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা।  দরুদে ইব্রাহিম বেশ ফজিলতপূর্ণ।  পাঁচ ওয়াক্ত সালাতে এই দরুদ পড়া হয়।  সালাত ছাড়াও অন্যান্য যেকোনো সময় এই দরুদ শরিফ পাঠে রয়েছে মুস্তাহাব সওয়াব।

সালাত তথা দরুদ পাঠের পুরস্কারের আরেকটি দিক হলো আল্লাহর সম্মানিত ফেরেশতারা সালাত তথা দরুদ পাঠকারীর জন্য দোয়া করেন।  হজরত আমির বিন রাবিয়া (রা.) বলেছেন, আমি রাসূলে আকরাম (সা.)কে খুতবায় বলতে শুনেছি যে, যে ব্যক্তি আমার ওপর সালাত তথা দরুদ পাঠ করবে, যতক্ষণ সে সালাত তথা দরুদ পাঠ করতে থাকবে, ততক্ষণ ফেরেশতারা তার জন্য দোয়া করতে থাকবে, অতএব, কোনো বান্দা চাইলে তা বেশি করুক অথবা কম করুক।  হাইসামি মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/১৬০।

সালাত তথা দরুদ পাঠের স্পেশাল দিক হলো ফেরেশতারা দরুদ পাঠকারীর নাম ও পরিচয়সহ তার সালাত তথা দরুদ রাসূলে আকরাম (সা.)-এর কাছে পৌঁছিয়ে দেয়।  এটা বিশ্বের যে প্রান্ত থেকেই পাঠ করুক না কেন।

হজরত আবু মুহাম্মদ কাব ইবনে উজরাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (স.) (একদা) আমাদের কাছে এলেন। আমরা বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! আপনার প্রতি কীভাবে সালাম পেশ করতে হয় তা জেনেছি, কিন্তু আপনার প্রতি দরুদ কিভাবে পাঠাব?’ তিনি বললেন, ‘তোমরা বলো- اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ وَّعَلى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدُ، اَللّهُمَّ بَارِكْ عَلى مُحَمَّدٍ وَّعَلى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ

উচ্চারণ: ‘আল্লা-হুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিঁউ অআলা আ-লি মুহাম্মাদ, কামা স্বল্লাইতা আলা ইবরা-হীমা অ আলা আ-লি ইবরা-হিম, ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ। আল্লা-হুম্মা বা-রিক আলা মুহাম্মাদিঁউ অআলা আ-লি মুহাম্মাদ, কামা বা-রাকতা আলা ইবরা-হিমা অ আলা আ-লি ইবরা-হিম, ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ।’

অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মদ ও তার বংশধরের উপর রহমত বর্ষণ কর, যেমন তুমি হজরত ইব্রাহিম ও তাঁর বংশধরের উপর রহমত বর্ষণ করেছ। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত গৌরবান্বিত।’ (বুখারি: ৩৩৭০, মুসলিম: ৪০৬, তিরমিজি: ৪৮৩, নাসায়ি:

মহানবী (সা.)-এর প্রতি হৃদয়ের গভীরে মহব্বত ও ভালোবাসা পোষণ করা এবং তার জন্য মহান আল্লাহর দরবারে কায়মনোবাক্যে দোয়া করা— প্রত্যেক উম্মতের ঈমানি কর্তব্য।