৮ চ্যালেঞ্জে ইসি

 আন্তরিকতায় বিন্দুমাত্র ঘাটতি থাকবে না                 -কাজী হাবিবুল আউয়াল, সিইসি ক্স            মাঠের পরিবেশ এখনো ভালো আছে - অশোক কুমার দেবনাথ, অতিরিক্ত সচিব ক্স            সুষ্ঠু নির্বাচনে ইসির জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে                 -এম সাখাওয়াত হোসেন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার

সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ সালের মধ্যে ভোট করার টার্গেট নিয়ে সাজানো হচ্ছে মাঠ, নেয়া হচ্ছে একের পর এক পদক্ষেপ। নির্বাচনে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ, নির্বিঘ্ন প্রচার, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা রোধ, হয়রানিমূলক মামলা নিয়ন্ত্রণ, প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করা, নির্বাচনী অনিয়মে আইন অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারও বৈধ অস্ত্র জমা নেয়াসহ অন্তত ৮ ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সর্বজন গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেয়ার পরিকল্পনা করেছে ইসি। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন নানা অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ, সীমানা পুননির্ধারণ, ভোটার তালিকা প্রণয়ন, ভোটকেন্দ্র স্থাপন, নতুন দলের নিবন্ধনসহ কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। এ ছাড়া ৬৪ জেলা ও ১০টি আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে সংসদ নির্বাচন নিয়ে মত বিনিময় হয়েছে। এটা মূলত প্রাথমিক সভা। কিছু জানতে চাওয়া হয়েছে, কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মূলত ভোটার তালিকা, ভোটকেন্দ্রের প্রস্তুতি নিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে। তাদের সুনির্দিষ্ট সমস্যা রয়েছে কি না, একেক অঞ্চলে একেক সমস্যা থাকতে পারে। সেটা জানতে চাওয়া হয়েছে। যেমন পার্বত্য অঞ্চলে কিছু কেন্দ্র আছে এরকম সব জায়গায় কিছু কিছু নির্দিষ্ট সমস্যা আছে, সেই সব সমস্যা সমাধানের পরিকল্পনা রয়েছে।

জানতে চাইলে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, এখনও দ্বাদশ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা বিষয়ে চ’ড়ান্ত আলোচনা হয়নি। তবে মাঠের কর্মকর্তারা বড় ধরনের কোনো চ্যালেঞ্জ বা সংকটের কথা বলেননি। মাঠের পরিবেশ এখনো ভালো আছে। মেইনলি তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতার কথা বলেছে। জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার সবার সহযোগিতা নিয়ে তাদের কাজ করতে হবে। আমাদের প্রশিক্ষণ আছে ডিসি, এসপিদের সঙ্গে। সেসময় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হবে।

তিনি বলেন, কোথাও কোন ত্রুটি রয়েছে তা ইসিতে জানানোর জন্য বলা হয়েছে। আর সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য মাঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলাসহ সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করেছেন। তারা অতিরিক্ত কিছু চায়নি। কোনো ঘাটতির কথা উল্লেখ করেননি। নির্বাচনী আচরণবিধি যাতে সবাই মেনে চলে এজন্য তারা সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন। এই বিষয়েই বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গতকাল শনিবার মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সরকারের ওপর নির্ভর করতে হবে।

সিইসি বলেন, আপনাদের অভিজ্ঞতাগুলো আমরা শুনতে চাই। নির্বাচনের প্রস্তুতি কতটা হয়েছে, কোনোরকম ঘাটতি রয়েছে কি না সে বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করব। আমরা বারবার করে বলেছি যে নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ এবং অংশগ্রহণমূলক বলতে আমরা জানি যে ভোটাররা ব্যাপক সংখ্যায় আসবে। এ বিষয়ে আপনাদের যে দায়িত্ব রয়েছে সেটা আমরা পরিষ্কারভাবে জানাতে চেষ্টা করব। আপনাদের যে দায়িত্ব থাকবে সেটা যেন প্রতিপালিত হয়, সে বিষয়ে আমাদের দিক থেকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকবে।

সিইসি বলেন, আমরা বারবার ব্যক্ত করেছি যে, আগামী সাধারণ নির্বাচন যেন অবাধ, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ এবং উৎসবমুখর হয় সেই লক্ষ্যে আমাদের প্রয়াসের কোনোরকম ঘাটতি থাকবে না। আমাদের আন্তরিকতায় বিন্দুমাত্র ঘাটতি থাকবে না। তিনি আরও বলেন, আমাদের সরকারের সহায়তার ওপর নির্ভর করতে হবে। সরকারের জনপ্রশাসন, পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটা সুদৃঢ় করে নির্বাচনের যে উদ্দেশ্য অর্থাৎ অবাধে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নির্বাচনের ফলাফল কীভাবে উঠে আসবে সেটা নিয়েও আলোচনা করা হবে।

এ বিষয় সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সবদল অংশগ্রহণে ইসি ব্যার্থ হলে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার সুযোগ নেই।

প্রার্থীদের অভিযোগ তাৎক্ষণিক ইসির ব্যবস্থা নিতে হবে। কোনো প্রার্থীরা মনবল না হারায় সে দিকে ইসির জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে।