যেভাবে শুরু করেছিলেন লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত কিংবা সৌম্য সরকাররা, শেষটা তেমন হলো না। বাংলাদেশের রান যেখানে কম করে ১৫০ হওয়ার কথা, সেখানে হলো কেবল ১২৭।
ডেথ ওভারে বাংলাদেশের ব্যাটিং আগের মতোই থেকে গেল। বরাবরই ডেথ ওভারে ভালো বোলিং করে পাকিস্তানি বোলাররা। এবারও তাই হলো। চেপে ধরলো বাংলাদেশকে। যার ফলে কাঙ্ক্ষিত স্কোরটা হলো না। ৮ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ থেমে গেল ১২৭ রানে।
অ্যাডিলেড ওভালে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানকে মাত্র ১২৮ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিতে সক্ষম হয়েছে সাকিব আল হাসানের দল।
ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিল বাংলাদেশ। প্রথম দুই ওভারে দেখেশুনে খেলার পাশাপাশি দুই বাউন্ডারিতে ১৩ রান তুলে ফেলে শান্ত-লিটন। তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলেই শাহিন শাহ আফ্রিদিকে উড়িয়ে বাউন্ডারি ছাড়া করেন লিটন। তবে বিপদটা আসে তিন বল পরেই। ওভারের পঞ্চম বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে শান মাসুদের হাতে ধরা পড়েন লিটন। সাজঘরে ফেরার আগে লিটন করেন ৮ বলে ১০ রান।
পরের ওভারের প্রথম বলেই শান্তর ক্যাচ ফেলেন শাদাব খান। এরপরই অবশ্য সৌম্য-শান্ত মিলে চড়াও হন মোহাম্মদ ওয়াসিমের ওপর। শান্তর বাউন্ডারি আর সৌম্যর ওভার বাউন্ডারিতে এই ওভার থেকে আসে ১৩ রান।
পাওয়ার প্লে’র শেষ দুই ওভার দেখেশুনেই কাটিয়ে দেয় দুই টাইগার ব্যাটার মিলে। ৬ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১ উইকেটে ৪০ রান। পাওয়ার প্লের পরও রানের ধারা অব্যাহত রাখে এই দুই ব্যাটার। তাদের ব্যাটে ভর করে প্রথম ১০ ওভার শেষে ১ উইকেট হারিয়ে ৭০ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। শান্ত ৩৭ বলে ৪১ ও সৌম্য ১৫ বলে ১৮ রান করেন।
ইনিংসের ১১ তম ওভারের চতুর্থ বলে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দলীয় ৭৩ রানে শাদাব খানকে রিভার্স করতে গিয়ে শান মাসুদের হাতে ধরা পড়েন সৌম্য সরকার। ১৭ বলে ২০ রান করে আউট হন তিনি। ওভারের পরের বলেই আউট হন ক্রিজে আসা অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। পরপর দুই বলে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। শাদাব খানের হ্যাট্রিকের সম্ভাবনা দেখা দিলে ওটা রুখে দেন ক্রিজে আসা আফিফ হোসেন। ১১ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ৭৪ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।
ইনিংসের ১২তম ওভারে মাত্র ৪ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। পরপর দুই উইকেট হারানোই রানের গতি কিছুটা কমে যায় বাংলাদেশের। তবে ইনিংসের ১৩তম ওভারের প্রথম বলে চার মারেন শান্ত। ওভারের চতুর্থ বলে ১ রান নিয়ে ৪৬ বলে নিজের অর্ধশতক পূরণ করেন নাজমুল শান্ত। এই ওভার থেকে ৯ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।
এরপর ইনিংসের ১৪তম ওভারের প্রথম বলে ৪ মারেন শান্ত। তবে পরের বলে মারতে গিয়ে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান শান্ত। দলীয় ৯১ রানে ৪৮ বলে ৫৪ রান করে ফিরে যান শান্ত। শেষপর্যন্ত ১৪ ওভার শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে ৯২ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।
ইনিংসের ১৫তম ওভারে বোলিংয়ে আসেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। এই ওভার থেকে ৭ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। ১৫ ওভার শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে ৯৭ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।
এরপর ইনিংসের ১৭তম ওভারে আরও দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দলীয় ১০৭ রানেই ওভারের দ্বিতীয় বলে মোসাদ্দেক সৈকত ও পঞ্চম বলে নূরুল হাসান সোহানকে আউট করেন শাহিন আফ্রিদি। এরপর ইনিংসের ১৯তম ওভারের প্রথম বলে পেসার তাসকিন আহমেদের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ১০৯ রানে ৭ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ১৯ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১১৬ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।
ইনিংসের শেষ ওভারে দ্বিতীয় বলে চার মারেন আফিফ হোসেন। পরের বলে সিঙ্গেল নিয়ে নাসুমকে স্ট্রাইক দেন তিনি। ওভারের তৃতীয় বলে চার মারেন নাসুম। এরপর চতুর্থ বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মোহাম্মদ ওয়াসিমের হাতে ধরা পড়েন নাসুম। ৬ বলে ৭ রান করে আউট হন তিনি। শেষপর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ১২৭ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।
পাকিস্তানের পক্ষে শাহিন আফ্রিদি ৪টি ও শাদাব খান নেন ২টি উইকেট।