হুথিদের বিরুদ্ধে গোপন অভিযান চালাতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন মার্কিন নেভি সিলসের দুই কমান্ডো। মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) মার্কিন সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। তবে নিখোঁজ দুই কমান্ডের নাম প্রকাশ করেনি সেন্টকম। বিবৃতিতে সেন্টকম বলে, গত বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) রাতে সোমালিয়া উপকূলের কাছে আরব সাগরের আন্তর্জাতিক জলসীমায় এই অভিযান চালায় নেভি সিলস। অভিযানে হুতিদের কাছে যাওয়ার পথে ইরানের তৈরি ক্ষেপণাস্ত্রের অংশসহ অন্যান্য অস্ত্রের চালান জব্দ করা হয়। এসব অস্ত্র বহনকারী ছোট একটি নৌযানও জব্দ করে সেন্টকম। ওই অভিযানে নেভি সিলসের নিখোঁজ দুই কমান্ডোও যুক্ত ছিলেন। সেন্টকম বলছে, জব্দ করা অস্ত্রবাহী নৌযানটিতে উঠতে গিয়ে নেভি সিলসের এক কমান্ডো বড় ঢেউয়ের আঘাতে সমুদ্রে ছিটকে পড়েন। তাকে উদ্ধার করতে আরেক কমান্ডো সমুদ্রে নামেন। পরে উভয় কমান্ডোই নিখোঁজ হয়ে যান। সেন্টকম কমান্ডার জেনারেল মাইকেল এরিক কুরিলা বলেন, আমরা আমাদের নিখোঁজ সহকর্মীদের সন্ধানে ব্যাপক অনুসন্ধান চালাচ্ছি। মাস তিনেক ধরেই উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে লোহিত সাগর। সেখানে পণ্যবাহী জাহাজগুলোতে হামলা চালাচ্ছে ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথি। তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। এরই ধারাবাহিকতায় ১১ ও ১২ জানুয়ারি ইয়েমেনে হুথিদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলাও চালিয়েছে তারা। এখন হুথিদের অস্ত্রভাণ্ডার খুঁজে বের করতে গোপন অভিযান শুরু করেছে মার্কিন নৌবাহিনী। এই মিশনের অংশ হিসেবে ১১ জানুয়ারি আরব সাগরে নোঙর করে মার্কিন রণতরী ‘ইউএসএস লুইস বি. পুলার’। সোমালিয়া উপকূলে থাকা এই জাহাজ থেকেই অভিযান শুরু করে মার্কিন নেভি সিলস। জানা গেছে, আন্তর্জাতিক জলসীমায় নজরদারির পাশাপাশি হুথিদের অস্ত্রভাণ্ডার খুঁজে বের করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল নেভি সিলস কমান্ডোদের। ওই অঞ্চলে তল্লাশির পর হুথিদের বড় অস্ত্রভাণ্ডারের সন্ধান পায় তারা। বাজেয়াপ্ত করা হয় সেই সমরাস্ত্র। সেগুলোর মধ্যে ছিল ইরানে তৈরি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের অংশবিশেষ, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ইত্যাদি। এসব অস্ত্র দিয়েই হুথিরা লোহিত সাগরে হামলা চালায় বলে দাবি করেছে সেন্টকম। সেই অভিযানে গিয়ে নিখোঁজ ২ মার্কিন কমান্ডো। তাঁদের উদ্ধার করতে অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে মার্কিন সেনার সেন্ট্রাল কমান্ড বা সেন্টকম। মার্কিন সেনাবাহিনীর মোট ১১টি কমব্যাট কমান্ড রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম সেন্টকম। এই কমান্ডের আওতায় পড়ে মধ্যপ্রাচ্য। ফলে কৌশলগত দিক থেকে এই কমান্ডের গুরুত্ব অনেক বেশি।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান