হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ জাতিসংঘের

জাতিসংঘ ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের ভোট চলাকালে সংসদ সদস্য প্রার্থী হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

সংস্থাটির আবাসিক প্রতিনিধি গুয়েন লুইস তার টুইটে এই উদ্বেগের কথা বলেন। গুয়েন লিখেন, সহিংসতা ছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য প্রত্যেকের মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত ও সুরক্ষিত করতে হবে।

সোমবার (১৭ জুলাই) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রেস ব্রিফিংয়ে হিরো আলমের ওপর হামলার বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়।

প্রশ্নকারী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া তার বাংলাদেশ সফর শেষে ফেরার পরই দেশটির সরকার বিরোধীদের ওপর হামলার পুরোনো ধারায় ফিরেছে। গতকাল বাংলাদেশে একটি উপনির্বাচন হয়েছে। প্রধান বিরোধী দল এই উপনির্বাচন বয়কট করেছে। এই উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র এক প্রার্থী (হিরো আলম) হামলার শিকার হয়েছেন। তিনি এখন হাসপাতালে। উপনির্বাচনে ১০ শতাংশ ভোটও পড়েনি। এ অবস্থায় কীভাবে বিশ্বাস করবেন যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করবেন? কারণ, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। এমনকি এই উপনির্বাচনও অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। এই উপনির্বাচনেও প্রার্থীরা হামলার শিকার হয়েছেন। এ ব্যাপারে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মন্তব্য জানতে চাওয়া হয়।

এমন প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, আমি বলব, গণতান্ত্রিক নির্বাচনে এ ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতার কোনো স্থান নেই। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে সহিংসতার যেকোনো ঘটনা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে, স্বচ্ছভাবে ও নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করতে উৎসাহিত করি। যারা এ হামলার সাথে জড়িত, তাদের বিচারের আওতায় আনতে বলি।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, আমি যেটা বলব, যেমনটা আগেও আমরা বলেছি, বাংলাদেশ সরকার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করবে বলে আমরা আশা করব। আমরা বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে যাব।

হামলার পর হিরো আলম এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন বয়কট করে জানিয়েছিলেন তিনি হামলার বিষয় নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কাছে চিঠি দেবেন। এরপরই জাতিসংঘের এই উদ্বেগের ঘটনা ঘটলো।

হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৭ জুলাই) রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমডির) জনসংযোগ শাখার অতিরিক্ত উপকমিশনার কে এন রায় নিয়তি গণমাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, বিকেলে বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভোটকেন্দ্রের বাইরে হিরো আলমের ওপর হামলার পরপর ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) গুলশান বিভাগের সদস্যরা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তাদের গ্রেপ্তার করেছে।

সোমবার (১৭ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানীর বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে হিরো আলমের অফিস সহায়ক মো. সবুজ বলেন, আমরা বিদ্যানিকেতন ভোটকেন্দ্রের প্রবেশের সময় স্লোগান দিয়ে সরাসরি আক্রমণ করা হয়েছে। তারা সবাই মিলে কোনো কথা বলা ছাড়াই আক্রমণ করেছে। রাস্তায় টেনে ধরে মারা হয়েছে হিরো আলমকে।