দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীর রেণু বিক্রি শুরু হয়েছে। আজ শনিবার সকাল থেকে হ্যাচারীগুলোতে ভীড় করেন স্থানীয় ও দেশের বিভিন্ন প্রান্থের ক্রেতা সাধারণ। দুষ্প্রাপ্যতায় গত বছরের তুলনায় এবার দ্বিগুন দামে বিক্রি হচ্ছে রেণু।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, তারা দুই লাখ টাকা দাম দিলেও দরকষাকষিতে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি। যদিওবা গত বছর প্রতিকেজি রেণু বিক্রি হয়েছিল ৮০ হাজার টাকা দরে। গত বছরের তুলনায় দাম বেশি হওয়ায় অনেক ক্রেতা ফিরে গেছেন বলে জানা গেছে। যেহেতু চলতি এপ্রিল মাসে একটি ও জুন মাসে আরও দুটি জো আছে সেহেতু পুরোদমে ডিম ছাড়ার সম্ভাবনা আছে। তাই পরবর্তীতে রেণু কেনার সুযোগ থাকছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। পরবর্তীতে ডিমের পরিমাণ বাড়লে কমতে পারে রেণুর দাম।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, প্রতি ৪০কেজি ডিম থেকে এক কেজি রেণু উৎপাদন হয়। এবার সংগৃহীত ডিমের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৬৬০ কেজি। রেণু উৎপাদন হওয়ার কথা প্রায় ৪১ কেজি। প্রতিকেজি দেড় লাখ টাকায় বিক্রি হলে হালদা থেকে আয় হবে ৬১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। প্রতি কেজি রেণু থেকে অন্তত ৩ লাখ পোনা হবে।
হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘হালদার রেণু সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে প্রজনন হয়। সেজন্য গুণগত মান, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকে এবং দ্রুত বর্ধনশীল। তাই হালদার রেণুর দেশব্যাপী চাহিদা রয়েছে। প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন প্রান্থ থেকে ক্রেতারা ছুটে আসেন, ডিম সংগ্রহ উৎসবের পর বিক্রয় উৎসব হয়। তবে এবার রেণুর দাষ্প্রাপ্যতায় গত বছরের তুলনায় দাম বাড়তি। শৌখিন মৎস্যজীবিদের ক্রয় ক্ষমতা থাকলেও সবার ক্রয় ক্ষমতা নেই।’
রাউজান উপজেলা মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘শনিবার সকাল থেকে ক্রেতারা হ্যাচারীগুলোতে ভীড় করতে থাকেন। হালদার রেণুর আলাদা কদর থাকায় দেশের বিভিন্নপ্রান্থ থেকে ছুটে আসতে থাকেন ক্রেতা সাধারণ। এবার বিক্রি প্রতিকেজি রেণু বিক্রি হয়েছে দেড় লাখ টাকায়। কয়েকটি হ্যাচারীতে ক্রেতারা দরকষাকষি করে সর্বোচ্চ এক লাখ ত্রিশ হাজার টাকায় কিনতে চাইলেও বিক্রেতারা বিক্রি করেনি। সেজন্য ক্রেতাদের ফিরে যেতে হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, গত বছর হালদা নদী থেকে নিষিক্তি ডিম সংগ্রহ করা হয় ১৪ হাজার কেজি। সেসময় রেণু উৎপাদন হয়েছিল ৩৫০ কেজি। প্রতিকেজি রেণু বিক্রি হয়েছিল ৮০ হাজার টাকায়। দেশের অর্থনীতিতে যোগ হয়েছিল প্রায় দুই কোটি আশি লাখ টাকা।